ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস আরব ও ইসলামী বিশ্ব এবং বিশ্বের স্বাধীনচেতা মানুষদের প্রতি জরুরী আহ্বান জানিয়েছে ‘গাজা কাঁদছে’ শীর্ষক একটি বিশ্বব্যাপী সপ্তাহ পালনের জন্য।
হামাস এক বিবৃতিতে আগামী শুক্র, শনি ও রোববারকে ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে এবং আমেরিকার সমর্থনের প্রতিবাদে ‘বিশ্বব্যাপী ক্ষোভের দিন’ হিসেবে পালনের আহ্বান জানিয়েছে। এছাড়া তারা বিশ্বব্যাপী মঙ্গলবারকে শ্রমিক ধর্মঘটের দিন হিসেবে পালনের জন্য আহ্বান করেছে।
হামাস তাদের বিবৃতিতে বলেছে, “গাজার শিশুদের কান্না, আহত ও অসুস্থদের আর্তনাদ, ক্ষুধার্ত ও গৃহহীনদের হাহাকার বিশ্বের সব জীবন্ত বিবেকের কাছে আকুতি জানাচ্ছে।”
একটি পৃথক বিবৃতিতে হামাস বলেছে, ইসরায়েলি দখলদার সরকার টানা সাত সপ্তাহ ধরে গাজায় জীবনধারণের জন্য অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রী প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। তারা বলেছে, ২২ লাখের বেশি মানুষের ওপর ইসরায়েলের এই নিষ্ঠুর নীতি পরিকল্পিত গণহত্যার একটি মূল অংশ।
হামাস জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি তাদের আইনি ও মানবিক দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছে। তারা ইসরায়েলকে গাজায় গণঅনাহার নীতি বন্ধ করতে এবং মানবিক সাহায্য, খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রী প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার জন্য তাৎক্ষণিক ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। এছাড়াও হামাস আরব ও ইসলামী দেশগুলোর প্রতি গাজার এই অন্যায় অবরোধ ভাঙতে ঐতিহাসিক অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
জাতিসংঘের মানবিক সমন্বয় বিষয়ক কার্যালয় সোমবার সতর্ক করে বলেছে, গাজার মানবিক সংকট গত ১৮ মাসের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ। তারা জানিয়েছে, গত ৪৫ দিন ধরে গাজায় কোনো সরবরাহ প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি, যা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ের অবরোধ।
জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক কমিশন বলেছে, গাজার জনগণ ক্রমাগত বাস্তুচ্যুতি, অবিরাম নৃশংসতা এবং দৈনন্দিন বেঁচে থাকার সংগ্রামে ক্লান্ত। তারা জানিয়েছে, গত মার্চের মাঝামাঝি থেকে ৪ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সরবরাহ বন্ধ থাকায় ক্ষুধা ও রোগ আরও তীব্র হবে। কমিশন আরও বলেছে, ইসরায়েলের গাজায় চলমান নৃশংসতা কোনোভাবেই সহ্য করা উচিত নয়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েলের পুনরায় যুদ্ধ শুরুর পর ১,৬৩০ জন শহীদ এবং ৪,৩০২ জন আহত হয়েছেন।
আমেরিকার পূর্ণ সমর্থনে ইসরায়েল ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে, যার ফলে ১ লাখ ৬৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি শহীদ ও আহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশ শিশু ও নারী। এছাড়া ১১ হাজারের বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।
সূত্র: আল জাজিরা