বাংলাদেশের উদ্বেগে নয়াদিল্লির তীব্র প্রতিক্রিয়া, শান্তিপ্রিয় প্রতিবেশীর প্রতি অশালীন কূটনীতি
পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জেলা মুর্শিদাবাদে নতুন ওয়াকফ আইনকে কেন্দ্র করে ১১ এপ্রিল যে প্রতিবাদ শুরু হয়, তা অল্প সময়েই ছড়িয়ে পড়ে মালদা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও হুগলি জেলার কিছু অংশে। স্থানীয় মুসলিমদের আশঙ্কা, নতুন আইনের ফলে তাদের ধর্মীয় ও জমির অধিকার খর্ব হতে পারে।
প্রতিবাদের সময় কিছু এলাকায় উত্তেজনা চরমে পৌঁছে, সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটে। ভারতের গণমাধ্যমগুলো এসব বিক্ষোভে বাইরের প্রভাব, এমনকি বাংলাদেশের নাম টেনে এনে এক ধরনের প্রোপাগান্ডা চালাতে থাকে—যা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তোলে।
এর প্রেক্ষিতে, ১৭ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারত সরকারের প্রতি গভীর উদ্বেগ ও আহ্বান জানায়।
কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের এই শান্তিপূর্ণ ও মানবিক বিবৃতির জবাবে নয়াদিল্লির আচরণ ছিল অপ্রত্যাশিত, কূটনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত ও একতরফা দোষারোপমূলক। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বাংলাদেশকে উদ্দেশ্য করে বলেন:
“এটি একটি আড়াল করা এবং অসৎ প্রচেষ্টা। ভারতের সঙ্গে তুলনা টেনে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের অবস্থা আড়াল করা হচ্ছে।”
তিনি আরও দাবি করেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন চলছে এবং অপরাধীরা বিচারের উর্ধ্বে।
এই বক্তব্যে বাংলাদেশে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতের পক্ষ থেকে এটি কেবল প্রতিবেশী রাষ্ট্রের প্রতি অসংবেদনশীল আচরণই নয়, বরং নিজ দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি চলমান নিপীড়ন আড়াল করার একটি কৌশল।
ভারতের পক্ষ থেকে এমন ঘৃণাত্মক ও প্রতিক্রিয়াশীল বক্তব্য কেবল বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় জনগণের মর্যাদাকেই অপমান করেনি, বরং দুই দেশের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককেও প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।
কূটনৈতিক শালীনতা ও বাস্তবতা বিবেচনায়, প্রশ্ন উঠছে—ভারত কি নিজের দায় এড়াতে বাংলাদেশকে টার্গেট করছে?