কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা কানুকে লাঞ্ছিত করার ঘটনা নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। সম্প্রতি আব্দুল হাই ভূঁইয়া কানুর বিরুদ্ধে স্থানীয় লোকজনের এই পদক্ষেপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যা নানা মতবিরোধ সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালে কুলিয়ারা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন নিয়ে বিরোধের এক পর্যায়ে কানু স্থানীয় আব্দুল হালিম নামে এক ব্যক্তিকে মারধর করেন। শুধু তাই নয়, কানু তাকে টেনে নিয়ে পানিতে ফেলে অপমান-অপদস্ত করেন। সেই অপমান দীর্ঘদিন ধরে হালিম ও তার পরিবার মেনে নিতে পারেননি। এ বছরের শুরুর দিকে আব্দুল হালিমের মৃত্যু হলে তার পরিবারের ক্ষোভ আরও বাড়ে। গত ২২ ডিসেম্বর, প্রায় এক দশক আত্মগোপনে থাকার পর কানু বাড়ির বাইরে বের হলে স্থানীয় কিছু যুবক তাকে জোরপূর্বক ধরে কুলিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে নিয়ে আসেন। সেখানে তাকে স্থানীয় লোকজনের সামনে প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত করা হয়। এই সময় উপস্থিত কেউ কেউ ঘটনাটি ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেন। ভিডিওটি দ্রুত ভাইরাল হয় এবং ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়। স্থানীয়দের বক্তব্য অনুযায়ী, দীর্ঘদিন ধরে কানুর বিভিন্ন কার্যকলাপ নিয়ে এলাকায় অসন্তোষ ছিল। বিশেষ করে ২০০৮ সালের ঘটনার জের ধরে অনেকেই তার ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। ঘটনার পর চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটিএম আকতার উজ জামান জানান, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই ভূঁইয়া কানুর বিরুদ্ধে হত্যা, তথ্যপ্রযুক্তি আইন, এবং মারামারিসহ অন্তত নয়টি মামলা রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ সীমান্ত উত্তেজনা: অস্বস্তি না বাড়ানোর বার্তা নয়াদিল্লিকে দেবে ঢাকা
এই ঘটনার পর মুক্তিযোদ্ধা কানুকে লাঞ্ছিত করা নিয়ে বিভিন্নমুখী প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন, একটি ঘটনা নিয়ে এভাবে কাউকে অপদস্ত করা উচিত হয়নি। অন্যদিকে, অনেকে মনে করেন, তার আগের কর্মকাণ্ডের জেরেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
এ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সংগঠনগুলো এবং স্থানীয় প্রশাসন এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়নি। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে এবং এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে।
আমাদের সাথে ফেসবুকে যুক্ত হোন
Leave a Reply