স্বাস্থ্য খাতের সিন্ডিকেট ভাঙাসহ তিন দফা দাবিতে বরিশালে চলমান আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে বরিশাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি।
তিনি জানান, আগামীকাল রোববার সকাল ১১টায় নগরের সদর রোডের অশ্বিনী কুমার হলের সামনে থেকে প্রতিবাদী বিক্ষোভ মিছিল শুরু হবে।
হামলার অভিযোগ ও মামলা
সংবাদ সম্মেলনে মহিউদ্দিন রনি অভিযোগ করেন, “আমরা ১৮ দিন ধরে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার হাসপাতালের সামনে অনশনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হন। অথচ হামলার পর উল্টো হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার জুয়েল চন্দ্র শীল কোতোয়ালি মডেল থানায় আমাদের ৪২ জনকে আসামি করে মামলা করেন। তিনি জানিয়েছেন, হাসপাতালের পরিচালকের নির্দেশে মামলা করা হয়েছে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, হামলায় জড়িতদের জন্য বৃহস্পতিবার রাতে খিচুড়ি ও শুক্রবার দুপুরে তেহারি পার্টির আয়োজন করা হয়েছিল। এ ঘটনার সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা যুক্ত বলে দাবি করেন তিনি।
আন্দোলনের পটভূমি
১৭ দিন ধরে বরিশালে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ মিলে স্বাস্থ্য খাত সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছেন। এর মধ্যে ঢাকা–বরিশাল মহাসড়ক প্রায় ২৯ ঘণ্টা অবরোধ করা হয়েছে এবং শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফটকের সামনে কয়েকজন শিক্ষার্থী টানা তিন দিন অনশন করেন।
এ পরিস্থিতিতে বুধবার বরিশালে আসেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু জাফর। তিনি রাজনৈতিক দল, চিকিৎসক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিলেও আন্দোলনকারীরা স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সরাসরি না আসা পর্যন্ত আন্দোলন প্রত্যাহার করবেন না বলে জানান।
আন্দোলনকারীদের তিন দফা দাবি
১. দেশের সব সরকারি হাসপাতালে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, পর্যাপ্ত দক্ষ জনবল নিয়োগ, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করা।
২. স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও হাসপাতালে দুর্নীতি দমন, দলীয় লেজুড়বৃত্তিক চিকিৎসকদের রাজনীতি নিষিদ্ধকরণ, ডিজিটাল অটোমেশন ও জবাবদিহিমূলক টাস্কফোর্স গঠন।
৩. স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনকে জনগণের ভোগান্তির বিষয় শুনে তদন্তের ভিত্তিতে সুপারিশ, সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া।
আগামীকালের বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে আন্দোলনকারীরা তাঁদের দাবি আদায়ের সংগ্রাম আরও জোরদার করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।