হযরত সোলাইমান (আ:) এর ব্যাপারে এই কথা বিদিত আছে যে তিনি পশুপাখির ভাষা বুঝতেন। পবিত্র কুরআনের সুরা নামলে পিঁপড়ার সাথে তাঁর কথোপকথন এর দৃশ্যও অঙ্গন করা হয়েছে।
এতদিন বিষয়গুলো অনেকের কাছে অবিশ্বাস্য শোনালেও বিজ্ঞানের কল্যাণে আজ সাধারণ মানুষও পশু-পাখির ভাষা বুঝতে পারার পথে।
সম্প্রতি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কল্যাণে এমনই এক অগ্রগতির সাক্ষী হলো বিশ্ব। গুগল সম্প্রতি উন্মোচন করেছে DolphinGemma নামের এক বিস্ময়কর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক ভাষা মডেল, যার লক্ষ্য—ডলফিনদের জটিল ও রহস্যময় ভাষা বুঝে ফেলা এবং তার অনুকরণে মানুষের সঙ্গে তাদের যোগাযোগের সেতুবন্ধন গড়ে তোলা।
Wild Dolphin Project এবং Georgia Tech-এর সঙ্গে যৌথভাবে গবেষণা চালিয়ে গুগল তৈরি করেছে এই মডেলটি, যা দীর্ঘ দশকের পানির নিচের অডিও-ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে। প্রায় ৪০০ মিলিয়ন প্যারামিটার ব্যবহার করে DolphinGemma ডলফিনদের স্বরের ছন্দ, ধ্বনি ও শব্দ প্যাটার্ন বিশ্লেষণ করে, এবং তার ভিত্তিতে ডলফিন-সদৃশ নতুন শব্দ তৈরি করতে পারে।
এই মডেলটি একটি পরিবর্তিত গুগল পিক্সেল ফোনের Cetacean Hearing Augmentation Telemetry (CHAT) সিস্টেমের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করে। যদিও এটি এখনো পুরোপুরি ডলফিনদের ভাষা অনুবাদ করতে পারে না, তবে ইতোমধ্যেই এটি একটি সহজ ও যৌথ শব্দভাণ্ডার তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে, যা মানুষের সঙ্গে ডলফিনের মৌলিক পর্যায়ের যোগাযোগের পথ প্রশস্ত করছে।
এই প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রথমবারের মতো এমন এক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হলো, যেখানে মানুষ ও ডলফিনের মধ্যে সরাসরি সংলাপ গড়ে ওঠা আর শুধুই কল্পকাহিনি নয়। ভবিষ্যতের দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা এই প্রযুক্তি পরিবেশ গবেষণা, সামুদ্রিক প্রাণী সংরক্ষণ এবং প্রাণীজগত সম্পর্কে আমাদের বোঝাপড়ায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে।
ডলফিনের বুদ্ধিমত্তা ও সামাজিক আচরণ নিয়ে গবেষণার ইতিহাসে DolphinGemma হতে পারে এক যুগান্তকারী সংযোজন। কে জানে, সেদিন হয়ত আর দূরে নয় যেদিন মানুষ সকল জীব-জন্তুর সাথেই বাতচিৎ করবে!