রাষ্ট্রীয় বাহিনীর নামে গণহত্যা! শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ - গ্রেপ্তারি পরোয়ানা - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:
শিরোনামঃ
লিখছে এআই, ঘুমাচ্ছে মস্তিষ্ক নবীজিকে কটূক্তির অভিযোগে বাবা-ছেলে আটক, উত্তপ্ত লালমনিরহাট সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের পর্যালোচনায় ১৪ সদস্যের কমিটি গঠন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে যুদ্ধের বাজি খেলায় ট্রাম্প: বিজয় না বিপর্যয়? অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক সংস্কারসহ ১২৫ দফা রাবি ছাত্রশিবিরের ইরানে হামলায় যুক্তরাষ্ট্রে তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে ট্রাম্প ভারতে নারীদের একাকী ভ্রমণে সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র আকাশপথে আঘাত, পাতালে প্রতিরোধ: ইরান-যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল সংঘাতের এক বিপজ্জনক সন্ধিক্ষণ মার্কিন হামলার পরও তেজস্ক্রিয়তা বাড়েনি: জাতিসংঘ পরমাণু সংস্থা (IAEA) ইউএস নিউজ বেস্ট গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি র‌্যাঙ্কিংয়ে রাবির বড় অগ্রগতি

রাষ্ট্রীয় বাহিনীর নামে গণহত্যা! শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ – গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট সময় রবিবার, ১ জুন, ২০২৫
  • ৫০ বার দেখা হয়েছে

দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন এক ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গ্রহণ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আজ রোববার বিচারপতি গোলাম মোর্তজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল পাঁচটি অভিযোগ আমলে নিয়ে শেখ হাসিনা ও কামালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। অভিযুক্ত আইজিপি মামুন ইতোমধ্যে কারাগারে রয়েছেন।

পাঁচটি মানবতাবিরোধী অভিযোগ: আনুষ্ঠানিক অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে পাঁচটি মানবতাবিরোধী অপরাধের কথা বলা হয়েছে।

১. মানবতাবিরোধী অপরাধে উস্কানি ও প্ররোচনা।
২. শান্তিপূর্ণ জনতার ওপর সরাসরি গুলির নির্দেশ।
৩. গণহত্যার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন।
৪. রাষ্ট্রীয় বাহিনী ব্যবহার করে নিরস্ত্র মানুষের ওপর হামলা।
৫. প্রত্যক্ষ হত্যাকাণ্ড ও গুরুতর শারীরিক ক্ষতিসাধনের নির্দেশ।

আজকের এই ঘটনাটি দেশের ইতিহাসে আরও একটি দাগ টেনে দিয়েছে, কারণ এই প্রথম কোনো মামলার বিচার কার্যক্রম সরাসরি সম্প্রচার করা হলো বাংলাদেশ টেলিভিশনে। সকাল থেকে সারা দেশের মানুষ টিভির পর্দায় চোখ রেখেছিল এই ঐতিহাসিক বিচার দেখার জন্য।

গত বছরের জুলাই-আগস্ট মাসে দেশে গণঅভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় এই তিনজনের বিরুদ্ধে তদন্ত করে পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়। আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্রে শেখ হাসিনাকে ‘মাস্টারমাইন্ড’ ও ‘সুপিরিয়র কমান্ডার’ আখ্যা দিয়ে বলা হয়, তিনি রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে হেলিকপ্টার, ড্রোন, এপিসি এবং মারণাস্ত্র দিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন করার নির্দেশ দেন। গুলির সরাসরি আদেশ দেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল এবং সেই আদেশ বাস্তবায়ন করেন আইজিপি মামুন।

আজ দুপুর ১২টায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেন মামলার প্রধান প্রসিকিউটর মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম। অভিযোগপত্রে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে উস্কানি, সরাসরি গুলির নির্দেশ এবং রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মাধ্যমে গণহত্যা চালানোর সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে বলে জানানো হয়। এ মামলায় সাক্ষী রাখা হয়েছে ৮২ জনকে, যাদের মধ্যে রয়েছেন আহতদের চিকিৎসক, প্রত্যক্ষদর্শী, শহীদ পরিবারের সদস্য, আইনজীবী ও সাংবাদিক।

প্রসিকিউশনের তথ্যমতে, মামলায় উপস্থাপন করা হয়েছে শেখ হাসিনার ফোন কল রেকর্ড, ভিডিও ফুটেজ, জাতীয় দৈনিকের নিউজ কাটিং, উদ্ধারকৃত বুলেট, হেলিকপ্টারের ফ্লাইট শিডিউল এবং ঘটনাস্থলের ড্রোন ফুটেজ। এ ছাড়াও আহত-নিহতদের চিকিৎসা নথি, ফরেনসিক রিপোর্ট এবং বিভিন্ন আলামত জমা দেওয়া হয়েছে।

গত ১২ মে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের কাছে জমা দেওয়া হয়। এর আগে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ১৪ আগস্ট শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ দায়ের করা হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই প্রসিকিউশন বাদী হয়ে মামলা করে এবং আজ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গৃহীত হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মামলার রায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন বয়ে আনতে পারে। বহুদিন ধরে জমে থাকা অভিযোগ এবং প্রমাণ এবার সরাসরি ট্রাইব্যুনালে উঠলো। সারা দেশের মানুষ এখন তাকিয়ে আছে এই মামলার চূড়ান্ত রায়ের দিকে।

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT