
নব্বইয়ের দশক ছিল তথ্যপ্রযুক্তির বিস্ফোরণের ঠিক আগের সময়। সেই যুগের শিশুরাই যেন প্রযুক্তিমুক্ত শৈশবের শেষ প্রজন্ম। বাইরে খেলাধুলা, মৌসুম আর উৎসবের রঙ, আর পরিবারের উষ্ণতায় ভরা দিনের স্মৃতিগুলো এখন অনেকের মনে গভীর নস্টালজিয়া জাগায়।
শৈশবের দিনগুলো ছিল চিন্তাহীন ও স্বতঃস্ফূর্ত। কখন যে খেলা আর হুল্লোড়ে দিন কেটে কৈশোরে পৌঁছে গিয়েছিল, তা কেউ টেরই পায়নি। বড় হতে হতে বোঝা যায়—সেই সরলতায় ভরা দিনগুলো আর ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়; তারা সময়ের স্রোতে হারিয়ে গেছে।
নব্বইয়ের প্রজন্মের অনেকেই মনে করেন, শৈশবের প্রতিটি দিন যেন একটি ছোট জাদুঘর—যেখানে জমা থাকে অগণিত স্মৃতি। সন্ধ্যায় পড়তে বসা, হারিকেন বা কুপির আলোয় রাতের খাবার খাওয়া, নানুবাড়ির গল্পমাখা সময়, ২৫–৫০ পয়সার আনন্দ—সবই এখন এক বিশেষ আবেগের জায়গা দখল করে আছে।
শীতের কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে খেজুরের রস, বিকেলে লুকোচুরি বা দড়িলাফ, শীতের পোশাক পরে বন্ধুদের সঙ্গে মাঠে দৌড়—এসব দৃশ্য এখন শুধু স্মৃতিতে জীবন্ত। নগরায়ণ ও প্রযুক্তির আধিপত্যে ক্রমেই সরে গেছে সেই অতীতের সরল আনন্দগুলো।
আজকের শিশুরা যেখানে মোবাইল ও ইন্টারনেটনির্ভর জগতে বড় হচ্ছে, সেখানে নব্বইয়ের প্রজন্ম ফিরে তাকায় এক ভিন্ন বাস্তবতার দিকে—যেখানে আনন্দ ছিল সহজ, দিনগুলো ছিল ধীর, শান্ত ও পরিবারকেন্দ্রিক। শৈশবের সেই হারানো ডিসেম্বর তাদের মনে চিরকালই ছড়িয়ে থাকে উষ্ণতার এক আভা হয়ে।