পবিত্র রমজান মাসে সারা দিন রোজা রাখার পর স্বাস্থ্যসম্মত ইফতার গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অস্বাস্থ্যকর খাবার খেলে এসিডিটি ও অন্যান্য শারীরিক সমস্যার ঝুঁকি বাড়তে পারে।
পরিবারের সবার জন্য উপযুক্ত ইফতার
ইফতার আয়োজন করার সময় পরিবারের সদস্যদের শারীরিক চাহিদা ও স্বাস্থ্যগত অবস্থা বিবেচনা করা জরুরি। ছোটদের জন্য বেশি পরিমাণে প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার রাখা উচিত। বয়স্কদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত বিকল্প বেছে নিতে হবে। যেমন—কিডনি রোগীদের জন্য ডাল বা ডালজাত খাবার এড়িয়ে চলা ভালো। হৃদরোগীদের জন্য অতিরিক্ত তৈলাক্ত ও চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মিষ্টিজাতীয় খাবার বাদ দেওয়া জরুরি। তাই পরিবারের প্রতিটি সদস্যের জন্য আলাদা পরিকল্পনায় ইফতার তৈরি করা ভালো।
সঠিক পানীয়ের গুরুত্ব
সারা দিনের পানিশূন্যতা দূর করতে ইফতারে স্বাস্থ্যকর পানীয় রাখা প্রয়োজন। সাধারণত লেবু-চিনির শরবত জনপ্রিয় হলেও চিনির পরিবর্তে প্রাকৃতিক বিকল্প গ্রহণ করা ভালো। বেল, তরমুজ, পেঁপে, আনারস বা মাল্টার জুস উপকারী হতে পারে। এছাড়া চিনিমুক্ত মিল্কশেক, টক দইয়ের লাচ্ছি কিংবা চিড়ার শরবতও ভালো বিকল্প হতে পারে।
খেজুর ও ফল রাখুন ইফতারে
খেজুর উচ্চ ক্যালরি ও ফাইবারসমৃদ্ধ, যা দ্রুত শক্তি জোগায় এবং শরীরের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে। ইফতারে খেজুরের পাশাপাশি চিবিয়ে খাওয়ার উপযোগী ফল যেমন—আপেল, পেয়ারা, নাশপাতি, বরই ও তরমুজ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়।
ভাজাপোড়া যত কম, তত ভালো
জিলাপি, পেঁয়াজু, বেগুনি, চপ, পাকোড়া ও অন্যান্য ভাজা খাবার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্য ও ইউরিক এসিড বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। তাই এগুলো যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলাই ভালো। একেবারে বাদ না দিলে কমপক্ষে একটি মাত্র পদ গ্রহণ করা উচিত।
স্বাস্থ্যকর ইফতারের তালিকা
পানীয়: চিনি ছাড়া এক গ্লাস ফলের জুস (পেঁপে, বেল, আনারস, মাল্টা, তরমুজ), চিনিমুক্ত মিল্কশেক বা টক দইয়ের লাচ্ছি, চিড়ার শরবত।
ফল: দুটি খেজুর ও অন্যান্য ফলের এক টুকরা করে (আপেল, পেয়ারা, শসা, ক্ষীরা)।
প্রোটিন: একটি সেদ্ধ ডিম (কুসুমসহ)।
শস্যজাতীয় খাবার: আধা কাপ বুট ভুনা, এক কাপ মুড়ি, এক-দুই কাপ হালিম।
বিকল্প: দেড় কাপ ভেজানো চিড়া, এক কাপ দুধ বা টক দই, একটি কলা।
সঠিক ও পুষ্টিকর ইফতার গ্রহণ করলে শরীর সুস্থ থাকবে, রোজার উপকারিতা বজায় থাকবে, এবং দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।