মধ্যপ্রাচ্যের চলমান উত্তেজনায় ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাকযুদ্ধ তীব্র আকার ধারণ করেছে। ইসরায়েলের সাথে যুদ্ধবিরতির পর ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে দাবি করেছেন যে, আমেরিকা এই যুদ্ধ থেকে কোনো সাফল্য অর্জন করতে পারেনি, বরং ইরানই বিজয়ী হয়েছে এবং “আমেরিকার মুখে এক কঠিন থাপ্পড়” দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমেরিকা সরাসরি এই সংঘাতে জড়িয়েছে কারণ তারা আশঙ্কা করেছিল যে ইসরায়েল “সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যাবে”। খামেনির মতে, ট্রাম্পের এই মন্তব্যই প্রমাণ করে যে, যুক্তরাষ্ট্র কেবল ইরানের আত্মসমর্পণেই সন্তুষ্ট হবে, কিন্তু ইরান কখনোই আত্মসমর্পণ করবে না।
অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন যে, ইরানের সাথে চলমান সংঘাতে আমেরিকাই ইসরায়েলকে বাঁচিয়েছে। তুর্কি সংবাদমাধ্যম টিআরটি গ্লোবাল-এর আজ বৃহস্পতিবারের (২৬ জুন) প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রাম্প বলেছেন, এবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকেও আমেরিকা রক্ষা করবে। ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ এক বার্তায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের বিচার অবিলম্বে বাতিল করার অথবা তাকে ক্ষমা করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, নেতানিয়াহুকে সোমবার আদালতে হাজির হওয়ার কথা রয়েছে। এতে ইসরায়েলের বিরোধী দল ইয়েশ-আতিদের প্রধান নেতা ইয়ার লাপিড সহ অন্যান্য নেতারা তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তারা ট্রাম্পকে ইসরায়েলের রাজনীতিতে নাক না গলাতে আহ্বান জানান। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই বক্তব্য ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে ইসরায়েলের অবৈধ হামলায় মার্কিন সম্পৃক্ততা এবং এর প্রতি সমর্থনের দিকেই ইঙ্গিত করে।
এই দুই নেতার পরস্পরবিরোধী মন্তব্য মধ্যপ্রাচ্যের সংকটকে আরও জটিল করে তুলেছে। একদিকে ইরান নিজেদের বিজয়ী দাবি করছে এবং আমেরিকার হস্তক্ষেপের নিন্দা জানাচ্ছে, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের রক্ষাকর্তা হিসেবে নিজেদের ভূমিকা তুলে ধরছে। এই পরিস্থিতিতে আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।