দিনাজপুরের চিরিরবন্দর থানার রাণীরবন্দরের নশরতপুর ইউনিয়নের বশির মেম্বার পাড়ায় ঘটে গেছে এক মর্মান্তিক ঘটনা। মাহফুজা আক্তার (১৫) নামের এক মুসলিম কিশোরীকে হত্যার ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে উপেন চন্দ্র পাল (৩৫) নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপেন চন্দ্র পাল মাহফুজাকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায়, তিনি নানা ধরনের ভয়ভীতি এবং মাহফুজার মাকে হত্যার হুমকি দিতে শুরু করেন। পরে সুযোগ পেয়ে একাধিকবার মাহফুজাকে জোরপূর্বক শারীরিক নির্যাতন করেন।
মাহফুজা ভয় এবং লজ্জার কারণে প্রথমে চুপ ছিলেন। তবে পরিস্থিতি অসহনীয় হয়ে ওঠায়, গত ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ চিরিরবন্দর থানায় ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা করেন। এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে মাহফুজা ও তার পরিবারের ওপর চরম নির্যাতন শুরু হয়। চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি, অভিযুক্ত উপেন চন্দ্র পাল ও তার সহযোগীরা মাহফুজার বাড়িতে চারপাশে খড় দিয়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। পরিবারের সদস্যরা কোনো রকমে প্রাণে বাঁচলেও তাদের ঘরবাড়ি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্ৰস্ত হয়।
ঘটনার প্রায় এক মাস পেরিয়ে গেলেও অভিযুক্ত উপেন চন্দ্ৰ পালকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। বরং অভিযোগ রয়েছে, অপরাধী এবং তার সহযোগীরা এখনো মাহফুজা ও তার পরিবারকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। মাহফুজার বাবা-মা জানান, তারা বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। “আমরা থানায় অভিযোগ দিয়েছি, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। আমাদের মেয়ে ন্যায়বিচার পাবে কিনা, তা নিয়ে আমরা সন্দিহান,” বলেন মাহফুজার বাবা। স্থানীয়রা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তারা অবিলম্বে অভিযুক্তের গ্রেপ্তার এবং বিচার দাবি করেছেন।”এভাবে একটা অসহায় পরিবারের সঙ্গে এমন অন্যায় হতে পারে না। এটা আমাদের সমাজের জন্য লজ্জাজনক,” বলেন এলাকার এক প্রবীণ ব্যক্তি।
বর্তমানে মাহফুজার পরিবার নিরুপায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। তারা প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সারা দেশজুড়ে উঠেছে #JusticeForMahfuja দাবির স্লোগান। “আমরা মাহফুজার পাশে আছি। ন্যায়বিচার না পাওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব,” বলছেন মানবাধিকার কর্মীরা।এখন দেখার বিষয়, প্রশাসন কত দ্রুত এই অপরাধের বিচার নিশ্চিত করতে পারে।
Leave a Reply