নোটিশ:
শিরোনামঃ
ইউরোপে নজিরবিহীন বিদ্যুৎ বিপর্যয় সরাসরি ট্রেন চালুর দাবিতে সড়ক অবরোধ: লালমনিরহাটে আন্দোলন তীব্র উপদেষ্টাদের এপিএস-পিও’র দুর্নীতির খোঁজে মাঠে নেমেছে দুদক ইরানে ভয়াবহ বিস্ফোরণ: নিহত ৪০, আহত ১২০০, নেপথ্যে ইসরায়েল জাবিতে হামলার ঘটনায় ২৫৯ ছাত্রলীগ কর্মী বহিষ্কার, ৯ শিক্ষক বরখাস্ত আন্ডারওয়ার্ল্ডের নতুন কৌশল: ‘মব’ সৃষ্টি করে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের আধিপত্য আল-জাজিরাকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানালেন, বাংলাদেশে ‘দ্বিতীয় ’স্বাধীনতার পর দেশ গঠনের দায়িত্বে আছেন আল-জাজিরায় ড. ইউনূস: শেখ হাসিনাকে থামাতে পারবেন না মোদি মহেশপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি যুবক নিহত ফ্রান্সে মসজিদে হামলা, নামাজরত মুসল্লিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা

সাংবাদিক জুলকারনাইন সামির আলোচিত সেই পোস্টের বঙ্গানুবাদ (পর্ব-২)

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট সময় শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ৭০ বার দেখা হয়েছে
সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের সামি, যার পোস্ট জন্ম দিয়েছে হাসিনা পতনের মাস্টারমাইন্ড সম্পর্কিত নতুন আলোচনার,বাংলাদেশের সরকার পতন,পোস্টের বঙ্গানুবাদ শেষপর্ব
সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের সামি, যার পোস্ট জন্ম দিয়েছে হাসিনা পতনের মাস্টারমাইন্ড সম্পর্কিত নতুন আলোচনার

৩০ জুলাই সকালে রেজা বনানীতে ফাহিম ও আন্দালিবের বাসায় পৌঁছান, ছাত্রদের পুরান ঢাকার নতুন নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যেতে। কিন্তু সেখানে পৌঁছে রেজা দেখেন, জায়গাটি খুব বেশি নিরাপদ নয়, কারণ এটি আদালতের কাছাকাছি অবস্থিত। অন্যদিকে, ছাত্ররাও থাকার জায়গার অবস্থা নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিল এবং ক্ষোভ প্রকাশ করে। তারা ফাহিম ও আন্দালিবের বাসায় ফিরে যেতে চায়, যা আমার বন্ধুর একেবারেই পছন্দ হয়নি। তবু ছাত্ররা আন্দালিবকে ফোন করে, এবং আন্দালিবও তাদের ফিরে আসতে বলেন। কিন্তু আমার বন্ধু এতে কঠোর অবস্থান নেন।

তিনি ওয়াহিদ আলমকে জিজ্ঞেস করেন, তার দেওয়া নিরাপদ আশ্রয়ের প্রস্তাব এখনও কার্যকর আছে কি না। ওয়াহিদ অত্যন্ত আন্তরিকভাবে সাহায্য করতে রাজি হন। আমার বন্ধু তার তথ্য রেজার কাছে পাঠান, আর রেজা ছাত্রদের নতুন নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে দেন, যা ওয়াহিদ আলমের বাইং হাউজের সদর দফতরও বটে। ফ্ল্যাটটি খুবই নিরাপদ ছিল এবং ছাত্রদের জন্য প্রয়োজনীয় সুবিধাগুলোও ছিল, যা পুরান ঢাকার আশ্রয়স্থানে ছিল না। রেজা ছাত্রদের ফোনে উন্নত মানের VPN-ও ডাউনলোড করে দেন, যা আমার বন্ধুর আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে কেনা হয়।

এদিকে, আমার বন্ধু যখন রেজার সঙ্গে পরিস্থিতি সামলাচ্ছিলেন, তখন দুপুর ২:১৩-এ সালমান তাকে বার্তা পাঠিয়ে জানতে চায়, পরদিনের জন্য কী ধরনের কর্মসূচি ঘোষণা করা যেতে পারে। ৩:২৪-এ সালমান আদালতগুলোর সামনে দেশব্যাপী প্রতিবাদ আয়োজনের প্রস্তাব দেন। আমার বন্ধু এই ধারণাটি পছন্দ করেন এবং আরও পরামর্শ দেন, আন্দোলন চালিয়ে যেতে ক্যাম্পাসগুলোর আশেপাশে প্রতিবাদ করা যেতে পারে, যেহেতু তখন ক্যাম্পাসগুলো অবরুদ্ধ ছিল।

৪:৫৪-এ সালমান তাকে হান্নানের সঙ্গে কথা বলে ফেসবুক পেজ থেকে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়ার জন্য বলেন, কারণ হান্নান মূলত লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি করার পরিকল্পনা করছিলেন। আমার বন্ধু হান্নানের সঙ্গে কথা বলেন এবং হান্নান সম্মত হন। ৫:৩২-এ সালমান কর্মসূচির বাংলা প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে সেটির যাচাই ও ইংরেজিতে অনুবাদ করতে বলেন। সন্ধ্যার মধ্যেই কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।

এদিকে, হান্নান আমার বন্ধুকে অনুরোধ করেন তাদেরকে যেন নতুন পোশাক ও লুঙ্গি দেওয়া হয়, এবং তাদের মাপ পাঠিয়ে দেন। আমার বন্ধু মিরপুরে থাকা তার এক সহকর্মীকে টাকা দিয়ে অনুরোধ করেন, সে যেন কাপড় কিনে মিরপুর DOHS-এ পৌঁছে দেয়। কিন্তু তখন কারফিউ চলছিল, তাই সব দোকান বন্ধ ছিল। তার সহকর্মী এক বন্ধুর মাধ্যমে পরিচিত এক দোকানদারকে রাজি করান, যেন তিনি গোপনে তার দোকান খুলে দেন। পরদিন সকালে ওয়াহিদ আলম নির্দিষ্ট জায়গা থেকে কাপড়গুলো সংগ্রহ করেন।

৩১ জুলাই দুপুর ১:৩১-এ সালমান আমার বন্ধুকে জানায়, সেদিনের কর্মসূচিতে অসাধারণ সাড়া পাওয়া গেছে। এরপর সালমান প্রস্তাব দেয়, পরদিনের জন্য একটি “নরম” কর্মসূচি ঘোষণা করা হোক, যেমন লিফলেট বিতরণ। আমার বন্ধু তাকে স্পষ্টভাবে বলেন, এটি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এবং তারা যেহেতু Gen-Z প্রজন্মের, তাই এসব বিষয়ে আরও সচেতন হওয়া উচিত।

তিনি আরও বলেন, আন্দোলনের গতি ধীর করা উচিত নয় এবং তার পরিবর্তে জাতিসংঘের অফিসের সামনে বিক্ষোভ করে সেখানে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞের নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করা উচিত। সালমান জানায়, অন্যরা পরদিন নরম কর্মসূচিই চায় এবং জাতিসংঘের সামনে বিক্ষোভ এক দিন পর করা যেতে পারে। কিন্তু একদিন পর শুক্রবার পড়বে, তাই তাতে কোনো লাভ হবে না। জাতিসংঘের সামনে বিক্ষোভ করতে হলে সেটি পরের দিনই, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার করতে হবে। সালমান বলে, সে বাকিদের সঙ্গে আলোচনা করে জানাবে।

এ সময় কাদেরের আশ্রয়দাতা আমার বন্ধুকে ফোন করে জানান, নাহিদের “গুরু” তাকে আন্দোলনের গতি কমিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো পুনরায় খোলার আন্দোলনে রূপান্তর করতে বলেছেন। এই “গুরু” কে? এক ব্যক্তি, মাহফুজ আবদুল্লাহ, যিনি এখন মাহফুজ আলম নামে পরিচিত। আমার বন্ধু তখন শফিকুল আলমকে ফোন করে মাহফুজ সম্পর্কে খোঁজ নেন। শফিকুল জানান, তিনি মাহফুজকে ভালোভাবেই চেনেন; তাকে দুটি বাংলা দৈনিকে চাকরি পাইয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু সে কোনো জায়গায় টিকতে পারেনি।

আমার বন্ধু অনুরোধ করেন, যেন মাহফুজ আন্দোলন ব্যাহত না করেন। তিন ঘণ্টা পর শফিকুল ফোন করে জানান, মাহফুজকে সতর্ক করা হয়েছে, যাতে তিনি আন্দোলনে বাধা না দেন। আমার বন্ধু সালমানের সঙ্গেও এ বিষয়ে কথা বলেন এবং তাকে কঠোরভাবে বলেন, আন্দোলনের গতি ধীর করা যাবে না।

সালমান উত্তর দেয়, আন্দোলনে অনেক স্টেকহোল্ডার আছে এবং সবাইকে একমত করানো কঠিন। তবে যতদিন সে বেঁচে আছে, আন্দোলন চালিয়ে যাবে—এমনকি প্রয়োজনে জীবন দিতেও প্রস্তুত। সে জানায়, ছাত্রদের নয় দফা দাবি সে-ই লিখেছে এবং ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট চলার সময় নিজে গিয়ে মিডিয়ায় তা পৌঁছে দিয়েছে। তবে ছেলেরা খুব ক্লান্ত, তাই পরদিনের কর্মসূচি হালকা রাখতে হবে। সে আমার বন্ধুকে একটি আকর্ষণীয় স্লোগান বা হ্যাশট্যাগ দিতে অনুরোধ করে।

আমার বন্ধু ফাহিমকে জিজ্ঞেস করেন, এবং ফাহিম বেশ কিছু হ্যাশট্যাগ ও স্লোগান পাঠায়। যেহেতু ছাত্ররা হালকা কর্মসূচিতেই স্থির ছিল, আমার বন্ধু প্রস্তাব দেন, রাত ৯টায় শহীদদের স্মরণে সারাদেশে মোমবাতি প্রজ্বলন করা হোক, কারণ এটি এক আবেগঘন ও শক্তিশালী বার্তা দেবে। সালমান এই ধারণাটি পছন্দ করে এবং অন্যদের সঙ্গে আলোচনা করতে বলে।

কিন্তু রাত ৮:৫৬-এ সালমান জানায়, পরদিনের কর্মসূচির নাম হবে “নায়কদের স্মরণে”, যেখানে সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের আয়োজন করা হবে—কোনো মোমবাতি প্রজ্বলন নয়। এবং শনিবার তারা “March for Campus” কর্মসূচির পরিকল্পনা করছে, যাতে প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও স্কুল খুলে দিতে বাধ্য হয়।

আমার বন্ধু কাদেরের আশ্রয়দাতার সঙ্গে কথা বলেন, যিনি এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হন। এরপর তিনি সালমানকে ধমক দেন, কারণ এই কর্মসূচি আন্দোলনের মূল লক্ষ্য থেকে সরে যাচ্ছে। তিনি বলেন, যদি তারা শুধু ক্যাম্পাস নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যায়, তাহলে এ আন্দোলনের কোনো ভবিষ্যৎ থাকবে না। জনসমর্থনও কমে যাবে, কারণ সাধারণ মানুষ দীর্ঘদিন ধরে টানটান উত্তেজনার মধ্যে থাকতে পারে না। শেখ হাসিনা সরকার regroup করবে এবং এরপর একে একে সবাইকে ধ্বংস করবে।

তিনি বলেন, তিনি তার বন্ধুদের জীবন ও কর্মজীবন ঝুঁকির মুখে ফেলছেন না শুধু কোটার জন্য। রাত ১১:১৫-এ সালমান তাকে জিজ্ঞেস করে, তিনি কি Zoom মিটিংয়ে ছাত্রনেতাদের সঙ্গে বসে এই বিষয়গুলো বুঝিয়ে দিতে পারবেন? তিনি রাজি হন, কিন্তু মিটিং আর কখনো হয়ে ওঠেনি।

  • দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ এর সর্বশেষ নিউজ পড়তে ক্লিক করুন: সর্বশেষ
  • দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ এর ফেসবুক পেজটি ফলো করুন: dailysabasbd

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT