কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার ধোবাজোড়া গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা ওমর ফারুক ভূঁইয়া দীর্ঘদিন ধরে নানা অপরাধে জড়িয়ে এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন। তিনি জুলাই আন্দোলনের সময় সংঘটিত একাধিক মামলার আসামি।
সম্প্রতি মিঠামইন থানার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। ঘাগড়া বাজার এলাকা থেকে তাকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করা হলে বিজ্ঞ আদালত ওমর ফারুককে কিশোরগঞ্জ কারাগারে পাঠান। কিছুদিন পর তিনি উচ্চ আদালত থেকে দুই মামলায় জামিন নিয়ে কারাগার থেকে ছাড়া পান।
জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই ওমর ফারুক ভূঁইয়া ফের পুরনো অপকর্ম শুরু করেন। রাতে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের কিছু লোকজনকে নিয়ে বিভিন্ন গ্রামে গোপন বৈঠক করতে থাকেন। এসব বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল আবারও এলাকায় প্রভাব বিস্তার এবং অর্থবাণিজ্যের সুযোগ তৈরি করা।
এমন সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়, যেখানে দেখা যায় ওমর ফারুক ভূঁইয়া মদ্যপ অবস্থায় গান গাইছেন এবং নাচছেন। ৪৫ সেকেন্ডের এই ভিডিও মুহূর্তেই ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর সাধারণ মানুষ এবং এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে ভিডিওটি পোস্ট করে তার কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানান।
ভাইরাল ভিডিও ও বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে তার অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সংবাদ প্রকাশের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি গত ২ জুলাই কিশোরগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্থানীয় সাংবাদিক হাজী গোলাপ ভূঁইয়াসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে একটি হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করেন। মামলাটি ৫০০/৫০১/৫০৬/১০৯/৩৪ ধারায় রুজু হয়। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন।
এই বিষয়ে মামলার আসামি সাংবাদিক গোলাপ ভূঁইয়া বলেন, “আমি সাংবাদিকতা করি, অপরাধের সঙ্গে কোনোভাবে জড়িত নই। আমার নামে উদ্দেশ্যমূলক মামলা দেওয়া হয়েছে। ওই পত্রিকায় ওমর ফারুকের সংবাদ ছাপা হলেও আমি ওই পত্রিকার প্রতিনিধি নই।”
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওমর ফারুক ভূঁইয়া অর্থ বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রামের নিরীহ মানুষ, প্রতিপক্ষ এবং সাংবাদিকদের হয়রানি করছেন। তার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে এলাকার মানুষ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছে।
বিষয়টি নিয়ে ওমর ফারুক ভূঁইয়ার সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, “ভাইরাল-সাইরাল দেখেন। এসব শুনতে আমি রাজি না।” এরপর ফোন কেটে দেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, এ ধরনের সমাজবিরোধী এবং অপরাধীচক্রকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।