আজ সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ৯টায় বাঙালি ও সকল উপজাতিদের অংশগ্রহণে উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে মহাসাড়ম্বরে উদযাপিত হলো বাংলা নববর্ষ ১৪৩২। বৈশাখের এই প্রথম দিনে আবহমান বাংলার জীবনধারার সাথে ওতঃপ্রোতভাবে জড়িত ঐতিহ্যবাহী উপকরণাদি যেমন: রেহাল, কুরআন, তসবি, লাঙল, কাস্তে, পালকি, ঘুড়ি, চরকি ইত্যাদির মোটিফ হাতে গণমানুষের অংশগ্রহণে উদযাপিত হয়েছে আনন্দ শোভাযাত্রা। আনন্দ শোভাযাত্রায় প্রদর্শিত মূল মোটিফ ফ্যাসিস্ট হাসিনার দানবীয় প্রতিমূর্তি হলেও অনেকের দৃষ্টি কেড়েছে তরমুজের টুকরোর বিশেষ মোটিফ। গত ১২ এপ্রিল ঢাকায় ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্বের বৃহত্তম গণজমায়েত সংঘটিত হওয়ার পর আজকে আরও একবার ফিলিস্তিনিদের সংগ্রামের সাথে একাত্মতা জানান দেন শোভাযাত্রায় তরমুজের মোটিফবাহী অংশগ্রহণকারীরা।
তারা জানান, মূলত এই তরমুজ ফিলিস্তিনের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর গাজা এবং পশ্চিম তীর দখল করে ইসরাইল ফিলিস্তিনি পতাকা বহন নিষিদ্ধ করে। ফিলিস্তিনিরা তখন থেকে পতাকার পরিবর্তে তরমুজের টুকরো ব্যবহার করে তাদের ইসরাইলবিরোধী প্রতিবাদ শুরু করে। ফিলিস্তিনের পতাকায় থাকা চারটি রঙ; লাল, সবুজ, সাদা, ও কালো তরমুজের ভেতর-বাহির মিলে চারটি রঙ (সবুজ খোসা, লাল-সাদা শাঁস ও কালো বিচি) এর সাথে মিলে যায় বলে তরমুজের টুকরো হয়ে ওঠে ফিলিস্তিনের পতাকার বিকল্প।
তরমুজের মোটিফ বহনের পাশাপাশি কয়েকজন অংশগ্রহণকারীকে ফিলিস্তিনের পতাকা ও ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ লেখা পোস্টারও বহন করতেও দেখা গেছে। চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে শুরু হওয়া এই আনন্দ শোভাযাত্রাটি শাহবাগ মোড়, টিএসসি, শহীদ মিনার, শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র, দোয়েল চত্বর ঘুরে পুনরায় চারুকলা প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়েছে। ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’ শ্লোগানে শুরু হওয়া এই শোভাযাত্রায় ৭টি বড়, ৭টি মাঝারি এবং ৭টি ছোট মোটিফসহ মোট ২১টি শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হয়।