বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারস্পরিক শুল্ক ইস্যুতে আলোচনার অগ্রগতি নিয়ে দেশের ব্যবসায়ী মহলে স্বস্তির বাতাস বইছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড জে. ট্রাম্পের ঘোষণায় ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত জানিয়ে চিঠি পাঠানোর পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে সরকারের সর্বোচ্চ মহল তৎপর রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দেশের ব্যবসায়ী নেতারা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান, বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, অর্থনীতিবিদ এবং রপ্তানিকারকরা। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) সঙ্গে শুল্ক হ্রাস নিয়ে পরবর্তী দফার আলোচনার প্রস্তুতি হিসেবেই এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘আমরা আমাদের বিদ্যমান সক্ষমতা নিয়েই যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ব্যবসা চালিয়ে যেতে আত্মবিশ্বাসী। আশা করছি যুক্তরাষ্ট্র যৌক্তিক পর্যায়ে শুল্ক নির্ধারণ করবে।’ তিনি আরও জানান, পারস্পরিক শুল্ক ইস্যুতে তৃতীয় দফা আলোচনার প্রস্তুতি চলছে এবং এরইমধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনার সময়সূচি চাওয়া হয়েছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এক সপ্তাহের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র পরবর্তী দফা আলোচনার সময়সূচি জানিয়ে দেবে।
বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য এ শুল্ক ইস্যু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিষয়টি নিয়ে সরকারের সর্বোচ্চ মহল কাজ করছে। কিছু পদক্ষেপ ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে, আরও নেওয়া হবে। ব্যবসায়ী ও স্টেকহোল্ডারদের মতামত নিয়ে পরবর্তী কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া হবে।’ তিনি জানান, ভবিষ্যতে যেসব জটিলতা আসবে সেগুলোরও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে।
ব্যবসায়ীদের পক্ষে বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘সরকার এখন পর্যন্ত যে অগ্রগতি দেখিয়েছে, তাতে আমরা সন্তুষ্ট। আমরা আশাবাদী পরবর্তী দফার আলোচনা থেকে ভালো সিদ্ধান্ত আসবে।’
প্রসঙ্গত, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঠানো এক চিঠিতে জানান, আগামী ১ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। এই কঠিন সিদ্ধান্তের পরও বাংলাদেশের বাণিজ্য মহল দৃঢ় মনোবল নিয়ে আলোচনা এগিয়ে নিচ্ছে, যা দেশের অর্থনৈতিক কূটনীতির ক্ষেত্রে এক সাহসী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।