গঙ্গা নদীর পানিবণ্টন ইস্যুতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠক কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়েছে। মূলত, ফারাক্কায় গঙ্গার পানির পরিমাপের পর দুই দেশের প্রতিনিধিরা বৈঠকে বসেন। যদিও আলোচনার শুরুতে অগ্রগতি দেখা গেলেও শেষ পর্যন্ত মতপার্থক্যের কারণে বৈঠক সফল হয়নি।
প্রথম দিনে গঙ্গার পানিবণ্টন নিয়ে আলোচনা হয় এবং উভয় পক্ষ আলোচনার সারসংক্ষেপে স্বাক্ষর করেন। তবে দ্বিতীয় দিনে সীমান্ত নদীগুলোর বিষয়ে আলোচনা জটিল হয়ে পড়ে। এ নিয়ে কোনো সমঝোতায় না আসায় সেই দিনের আলোচনা সংক্রান্ত মিনিটসে সই হয়নি।
বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতা মোহাম্মদ আবুল হোসেন জানান, বৈঠক পরিকল্পনা অনুযায়ী হয়েছে, তবে এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়। অন্যদিকে, ভারতের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য আসেনি। বৈঠক শেষে কোনো সংবাদ সম্মেলনও অনুষ্ঠিত হয়নি।
বৈঠকে প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে তথ্য ভাগাভাগি, বন্যা পরিস্থিতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন এবং সীমান্ত নদীগুলোর উন্নয়ন পরিকল্পনা। তবে বিভিন্ন বিষয়ে ঐকমত্য না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি বলে জানা গেছে।
গত বছরের বন্যায় বেশ কয়েকটি সীমান্ত নদীর বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাংলাদেশ এই বাঁধ মেরামতের অনুমতি চাইলেও ভারত এখনো চূড়ান্ত মত দেয়নি। তারা আগে বিষয়টি পর্যালোচনা করতে চায়।
তথ্য ভাগাভাগির ক্ষেত্রে ভারত সম্মত হলেও, তা আনুষ্ঠানিকভাবে নথিভুক্ত করা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়, ফলে চূড়ান্ত নথিতে স্বাক্ষর সম্ভব হয়নি।
প্রতিবছর গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তির আওতায় বাংলাদেশি প্রতিনিধিরা ভারতে গিয়ে পানির প্রবাহ পর্যবেক্ষণ করেন। এবছরও ৪ মার্চ ফারাক্কায় পানি পরিমাপের পর তারা জানান, পানির পরিমাণ কম থাকায় দুই দেশই কম পানি পাচ্ছে, তবে চুক্তি অনুযায়ী পানিবণ্টন হয়েছে।
এরপর, ৬ মার্চ দুই দেশের প্রতিনিধিরা গঙ্গার পানিবণ্টন, পানির স্বল্পতা এবং নদীর বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন এবং সে দিনের আলোচনা সংক্রান্ত সারসংক্ষেপে উভয় পক্ষের নেতারা স্বাক্ষর করেন।
সূত্র জানায়, সাময়িক জটিলতা কাটলে ভবিষ্যতে এই বিষয়ে সমঝোতা হতে পারে।