জাপানের তোকারায় দুই সপ্তাহে ৯০০ কম্পন, আতঙ্কে ঘুমহীন মানুষ - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:
শিরোনামঃ
২০ জুলাই বিইউপিতে শহীদ স্মরণ অনুষ্ঠান মসজিদ উদ্বোধনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে খতিবের মর্মান্তিক মৃত্যু দক্ষিণ কোরিয়ায় টানা ভারী বর্ষণে মৃত ৪, নিখোঁজ ২, হাজারো মানুষ গৃহহীন ইসরায়েল ‘সমস্ত বন্দিমুক্তির প্রস্তাব’ প্রত্যাখ্যান করেছে, দীর্ঘ যুদ্ধের প্রস্তুতির ঘোষণা হামাসের মিঠুনের পা ছোঁয়া, মোদির জড়ানো—দুর্গাপুরে এক অভিনব নাট্যচিত্র ঢাকা শহরের বুকে ‘চাপাতি হাতে ছিনতাই’, নীরব ছিল জনতা ও পুলিশ সোহরাওয়ার্দীতে জামায়াতের মহাসমাবেশে লাখো জনতার ঢল, শৃঙ্খলা-পরিকল্পনায় নজিরবিহীন উদাহরণ ইবি শিক্ষার্থীর মৃত্যুর প্রতিবাদে ‘টর্চ লাইট’ মিছিল, তদন্তের দাবিতে স্লোগানে মুখর ক্যাম্পাস শেকৃবিতে ‘জুলাই ছাত্র-জনতার আন্দোলন’ শহীদদের স্মরণে দোয়া মাহফিল জাবি ক্যারিয়ার ক্লাবের সভাপতি তুর্য, সম্পাদক নোমান

জাপানের তোকারায় দুই সপ্তাহে ৯০০ কম্পন, আতঙ্কে ঘুমহীন মানুষ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই, ২০২৫
  • ৬৭ বার দেখা হয়েছে

জাপানের দক্ষিণাঞ্চলের প্রত্যন্ত তোকারা দ্বীপপুঞ্জে গত দুই সপ্তাহে ৯০০–৯৫০টির বেশি ভূমিকম্প হয়েছে। দেশের আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, সাগরতলে এই ভূমিকম্প-ঝাঁকুনি বন্ধ হওয়ার কোনো সম্ভাবনার কথা এখনই বলা যাচ্ছে না। দ্বীপের মানুষ আতঙ্কে ঘুমাতে পারছেন না, কেউ কেউ পরিবার নিয়ে দ্বীপ ছেড়ে যাওয়ার কথাও ভাবছেন।

বুধবার (৩ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে সেখানে ম্যাগনিটিউড ৫.৫ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়। জরুরি সংবাদ সম্মেলনে দেশটির আবহাওয়া সংস্থার ভূমিকম্প ও সুনামি পর্যবেক্ষণ বিভাগের প্রধান আয়াতাকা এবিটা বলেন, “২১ জুন থেকে তোকারা দ্বীপপুঞ্জের আশপাশের সাগরে টেকটোনিক প্লেটের নড়াচড়ায় অস্বাভাবিক সক্রিয়তা দেখা যাচ্ছে। আজ বিকেল ৪টা পর্যন্ত ৯০০টির বেশি ভূমিকম্প রেকর্ড হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “বাসিন্দাদের জরুরি আশ্রয়ে যাওয়ার বা দ্বীপ ছেড়ে পালানোর প্রস্তুতি রাখতে বলা হয়েছে। কারণ পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।”

তোকারা ভিলেজ নামের দ্বীপ প্রশাসনের ওয়েবসাইট জানায়, মানুষেরা আতঙ্কে রাতে ঘুমাতে পারছেন না। এক নারী স্থানীয় এমবিসি টেলিভিশনকে বলেন, “সবসময়ই কাঁপছে মনে হয়। এমন পরিবেশে ঘুমানো খুব ভয়ঙ্কর।” অন্য আরেকজন বললেন, “আর কত দিন চলবে এইভাবে জানি না। ভাবছি, বাচ্চাদের নিয়ে এলাকা ছেড়ে যাওয়া দরকার কি না।”

সরকারি তথ্য বলছে, ২৩ জুন একদিনেই ১৮৩টি ভূমিকম্প রেকর্ড হয়েছিল। তারপর ২৬ জুন তা নেমে আসে ১৫-তে। ২৭ জুন ছিল ১৬। আবার ২৮ জুন বেড়ে যায় ৩৪-এ। ২৯ জুন আবার ৯৮। এরপর ৩০ জুন ছিল ৬২টি কম্পন।

এই অঞ্চলে এর আগে সেপ্টেম্বর ২০২৩-এ ৩৪৬টি ভূমিকম্প রেকর্ড হয়েছিল। তবে এবারের মাত্রা ও সংখ্যা দুই-ই অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।

দ্বীপপুঞ্জের ১২টি দ্বীপের মধ্যে ৭টিতে মাত্র ৭০০ জনের মতো মানুষের বসবাস। কোনো বড় শহর নেই। নেই হাসপাতালও। চিকিৎসার জন্য ৬ ঘণ্টা ফেরি করে যেতে হয় মূল ভূখণ্ড কাগোশিমা শহরে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তোকারা দ্বীপপুঞ্জের আশপাশের সাগরতল খুব অস্বাভাবিক ধরনের। এখানে চারটি টেকটোনিক প্লেটের মিলনস্থল। ফলে ভূমির নিচে চাপ জমে দ্রুত তা ভূমিকম্পের আকারে মুক্ত হতে থাকে। এজন্য এ এলাকায় এমন বারবার ভূমিকম্প হয়।

জাপান এমনিতেই বিশ্বের অন্যতম ভূমিকম্প-প্রবণ দেশ। বছরে প্রায় ১,৫০০টির মতো ভূমিকম্প হয়। পৃথিবীর মোট ভূমিকম্পের ১৮ শতাংশ-এর জন্ম এখানেই।

কেবল ভূমিকম্প নয় — স্মরণযোগ্যভাবে ২০২৪ সালের নতুন বছরের দিন নোটো উপদ্বীপে ভূমিকম্পে প্রায় ৬০০ জন নিহত হয়। আর ২০১১ সালের ৯.০ মাত্রার ভূমিকম্প ও সুনামি কেড়ে নেয় ১৮ হাজারের বেশি প্রাণ। সেই ধ্বংসাবশেষ এখনো স্মরণ করে জাপানবাসী।

সরকারও আতঙ্কে। কারণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী ৩০ বছরের মধ্যে নানকাই ট্রাফ অঞ্চলে বড় ভূমিকম্পের ৭৫%–৮২% সম্ভাবনা রয়েছে। একবার হলে সেটি ২ লাখ ৯৮ হাজার মানুষের প্রাণ নিতে পারে এবং ২ ট্রিলিয়ন ডলারের ক্ষতি করতে পারে।

তাই জাপান সরকার ‘মেগাকোয়েক’ পরিস্থিতির জন্য আরও বড় পরিসরে প্রস্তুতি বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। তবে ভূমিকম্প কবে হবে, তা নির্দিষ্টভাবে জানা সম্ভব নয়।

তোকারা দ্বীপপুঞ্জের বাসিন্দারা এখন শুধু একটাই প্রার্থনা করছে— এই কাঁপুনি থেমে যাক।

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT