কুমিল্লার মুরাদনগরে ছয় বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে বিচারের নামে অভিযুক্তকে ছয়টি জুতার বাড়ি ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
স্থানীয় মাতবরদের সালিশে এই রায় ঘোষিত হলেও ভুক্তভোগীর পরিবার তা মেনে নেয়নি। তবে মাতবররা জোরপূর্বক শিশুটির নানির হাতে জরিমানার টাকা তুলে দেন। একই সঙ্গে পরিবারটিকে হুমকি দেওয়া হয় যে, থানায় অভিযোগ করলে বসতভিটা ছাড়তে হবে।
শিশুটির নানি জানান, ঘটনার পর মাতবরদের জানালে তারা সালিশ ডাকার পরামর্শ দেন এবং পুলিশের কাছে গেলে ক্ষতি হতে পারে বলে ভয় দেখান। এ কারণে ১৫ দিন পর সালিশ বসানো হয়, যেখানে অভিযুক্ত বাবুলকে ছয়টি জুতার বাড়ি ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তবে বাবুলের পরিবার থেকে ক্রমাগত হুমকি দেওয়া হচ্ছে—এ বিষয়ে মুখ খুললে গ্রাম ছাড়তে হবে।
এ ঘটনায় তদন্ত করতে গিয়ে জানা যায়, সালিশের মাধ্যমে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ ছয়জন মাতবর বাবুল মিয়ার কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা নেন। তবে সেই অর্থ বণ্টন নিয়ে বিরোধ বাধে। চারজন মাতবর ১ হাজার টাকা করে এবং বাকি দুইজন ৫০০ টাকা করে নেন। অর্থ সমবণ্টন না হওয়ায় একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন মাতবররা।
সালিশে উপস্থিত এক ব্যক্তি জানান, বিচারের পর অভিযুক্ত বাবুল মিয়ার কাছ থেকে ইউপি সদস্য শাহীন মিয়াসহ ছয় মাতবরের জন্য আরও ৫ হাজার টাকা নেওয়া হয়। এর মধ্যে শাহীন, জাফর আলীর ছেলে বাবুল, সৈয়দ আলীর ছেলে বাবুল ও শাহজালাল ১ হাজার টাকা করে নেন এবং কবির ও সাগর পান ৫০০ টাকা করে।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য শাহীন মিয়া বলেন, “সালিশ পরিচালনা করেছেন ছন্দু মিয়া, রেনু মিয়া, সাগর, রাজু ও কবির। তাদের রায়ের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে তার বড় ভাই জুতাপেটা করেন এবং জরিমানার ৫ হাজার টাকা শিশুটির নানির হাতে তুলে দেওয়া হয়।”
এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান জানান, এখন পর্যন্ত কেউ থানায় কোনো অভিযোগ দায়ের করেনি।