ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের লাইফলাইন হিসেবে পরিচিত শিলিগুড়ি করিডোর, যা ‘চিকেনস নেক’ নামেও পরিচিত, সেখানে নিরাপত্তা জোরদার করেছে নয়াদিল্লি। সম্প্রতি করিডোরটিতে মোতায়েন করা হয়েছে অত্যাধুনিক এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা, ব্রহ্মস রকেটসহ উন্নত সামরিক সরঞ্জাম।
পশ্চিমবঙ্গের সংকীর্ণ এই ভূখণ্ডটি ভারতের মূল ভূখণ্ডকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সেভেন সিস্টার্স রাজ্যগুলোর সঙ্গে যুক্ত করেছে। এর পার্শ্ববর্তী দেশগুলো হলো নেপাল, বাংলাদেশ, ভুটান ও চীন—যা করিডোরটির কৌশলগত গুরুত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চীন সফরে গিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ নিয়ে মন্তব্য করেন। এরপর বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার বৈঠক হয়। এসব ঘটনার পর ভারতের নিরাপত্তা মহলে শিলিগুড়ি করিডোর ঘিরে সতর্কতা ও উদ্বেগ বাড়ে।
পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ভারত করিডোরটির নিরাপত্তায় রাফাল যুদ্ধবিমান, ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র, এমআরএসএএম এবং আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ আধুনিক অস্ত্র মোতায়েন করেছে। করিডোরের পাশে অবস্থিত সুকনায় ভারতের ত্রিশক্তি কর্পসের সদরদপ্তর রয়েছে, যা এই অঞ্চলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দু।
ভারতের সেনাপ্রধান সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন, শিলিগুড়ি করিডোরকে আর ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে নয়, বরং শক্তিশালী সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত করা হবে। অতীতে ২০১৭ সালের দোকলামে চীনের সড়ক নির্মাণ পরিকল্পনা প্রতিহত করেও এই করিডোরের ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব প্রকাশ পেয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভারত আরও প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতা এবং ওই অঞ্চলে চীনের সম্ভাব্য প্রভাব বিস্তারের আশঙ্কায় ভারত কৌশলগতভাবে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, শিলিগুড়ি করিডোর ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে অত্যন্ত সংবেদনশীল এলাকা। ফলে সেখানে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা বলয় গড়ে তোলা সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে।