বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম ইকবাল সম্প্রতি গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
চিকিৎসা শেষে তিনি সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন এবং একটি আবেগঘন ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে তার অনুভূতি প্রকাশ করেছেন।
সেই পোস্টে তিনি আল্লাহর অশেষ রহমতের কথা উল্লেখ করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এবং যেসব শুভাকাঙ্ক্ষী তার সুস্থতার জন্য দোয়া করেছেন, তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
কিন্তু দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ইংরেজি দৈনিক “দ্য ডেইলি স্টার” তাদের প্রতিবেদনে তামিম ইকবালের ফেসবুক পোস্টের ধর্মীয় অংশটি এড়িয়ে গেছে।
তামিমের পোস্টে তিনি স্পষ্টভাবে লিখেছিলেন,
“আল্লাহর অশেষ রহমত এবং সকলের দোয়ায় আমি ফিরে এসেছি।”
কিন্তু ডেইলি স্টার এই গুরুত্বপূর্ণ অংশটি উল্লেখ না করেই কেবল তার শারীরিক অবস্থা এবং তাকে সহায়তা করা মানুষদের নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করেছে।
এই ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
বিশেষ করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
কারণ তারা মনে করছেন, তামিম ইকবালের ধর্মীয় অনুভূতি ও কৃতজ্ঞতার প্রকাশকে ইচ্ছাকৃতভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে।
এটি নতুন কোনো বিতর্ক নয়। অনেকেই দাবি করছেন, ডেইলি স্টার দীর্ঘদিন ধরেই ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ইসলামিক মূল্যবোধকে উপেক্ষা করে আসছে।
এর আগেও বিভিন্ন ইস্যুতে তারা ইসলাম ও মুসলমানদের অনুভূতির প্রতি সংবেদনশীলতা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিভিন্ন সময় ইসলামের সাথে সম্পর্কিত বিষয়গুলো এড়িয়ে গিয়ে বা বিকৃতভাবে উপস্থাপন করার অভিযোগ উঠেছে পত্রিকাটির বিরুদ্ধে।
এবার তামিম ইকবালের পোস্টের ধর্মীয় অংশ ফেলে দেওয়ার বিষয়টি সেই বিতর্ককে আরও উসকে দিয়েছে।
নেটিজেনদের অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন,
“যদি কোনো তারকা তাদের ধর্মীয় অনুভূতির কথা প্রকাশ করেন, তবে সেটা উপেক্ষা করার অধিকার কি গণমাধ্যমের আছে?”
অনেকেই মনে করেন, এটি শুধু সাংবাদিকতার গাফিলতি নয়, বরং সুপরিকল্পিত একটি সিদ্ধান্ত।
বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা তামিম ইকবালকে ভালোবাসেন এবং শ্রদ্ধা করেন। তিনি শুধু একজন সফল ক্রিকেটার নন, বরং একজন দায়িত্বশীল ও অনুপ্রেরণাদায়ী ব্যক্তিত্ব।
তার মতো একজন ক্রিকেটার যখন কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যান এবং সেখান থেকে ফিরে এসে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন, তখন তা তার ভক্তদের জন্য অনুপ্রেরণার বিষয় হয়ে ওঠে।
কিন্তু মূলধারার একটি গণমাধ্যম যখন সেই কৃতজ্ঞতার প্রকাশকে ইচ্ছাকৃতভাবে এড়িয়ে যায়, তখন সেটি অনেকের কাছেই সন্দেহজনক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে হয়।
এই বিতর্কের পরও ডেইলি স্টার এখন পর্যন্ত কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি বা তাদের প্রতিবেদনে পরিবর্তন আনেনি।
তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা বাড়তে থাকায় হয়তো তারা কিছু ব্যাখ্যা দিতে বাধ্য হবে।
বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলোর দায়িত্ব হলো সকল সম্প্রদায়ের অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা এবং নিরপেক্ষ সাংবাদিকতা করা।
কিন্তু যদি কোনো মিডিয়া হাউজ একপেশে অবস্থান নেয় বা একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর অনুভূতি উপেক্ষা করে, তবে স্বাভাবিকভাবেই তাদের গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা কমে যাবে।
তামিম ইকবালের পোস্টের ধর্মীয় অংশ বাদ দেওয়া নিছক ভুল নাকি পরিকল্পিত সিদ্ধান্ত—এ নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
তবে এটি স্পষ্ট যে, দেশের একটি বিশাল জনগোষ্ঠী বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি এবং তারা চাইছেন, মিডিয়াগুলো দায়িত্বশীলতার সাথে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করুক।