সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড, মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা এবং সামরিক শাসনের সময়কার সহিংসতার মতো গুরুতর অভিযোগের বিচার আগে হওয়া উচিত। তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে যেসব অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে, তার চেয়েও বড় অপরাধ করেছে জামায়াতে ইসলামী, জিয়াউর রহমান ও এরশাদ। জামায়াত একাত্তরে লক্ষাধিক মানুষ হত্যা করেছে, জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে ছিলেন এবং তিন হাজারের বেশি সেনা কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাকে হত্যা করেছেন, আর এরশাদও হত্যাকাণ্ড চালিয়েছেন—এদের বিচার না করে শেখ হাসিনার বিচার করা সঠিক নয় বলে দাবি করেন তিনি।
বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুর রহমানের আদালতে যাত্রাবাড়ী থানার হত্যা মামলার রিমান্ড শুনানিতে তিনি এসব কথা বলেন। এদিন সকালে শাজাহান খান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম এবং ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতকে আদালতে হাজির করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা তাদের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, অভিযুক্তরা এজাহারভুক্ত আসামি, অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারের জন্য তাদের জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন।
শাজাহান খান তার শারীরিক অসুস্থতার কথা তুলে ধরে বলেন, তার হৃদযন্ত্রে পাঁচটি ব্লক রয়েছে এবং তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি অনুরোধ জানান, জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন হলে জেলগেটে করা হোক।
আদালতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে যখন শাজাহান খান অভিযোগ করেন যে, তাদের গায়েবি মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। তখন আইনজীবীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয় এবং আদালতের পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এরপর ম্যাজিস্ট্রেট একদিনের জন্য শাজাহান খান ও দুদিনের জন্য আতিকুল ও সৈকতের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আদালত ত্যাগ করার সময় শাজাহান খান পুনরায় বলেন, একাত্তরের গণহত্যার দায়ে জামায়াত, জিয়াউর রহমান ও এরশাদের বিচার আগে হওয়া উচিত। এছাড়াও, জুলাইয়ের ঘটনায় তিনি অনুতপ্ত বলেও জানান।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিতে আরিফ নামে এক শিক্ষার্থী নিহত হন। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ২৩৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।