রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে ও দিনব্যাপী কর্মসূচিতে পালিত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস।
১ সেপ্টেম্বর (সোমবার) সকাল সাড়ে ৯ টায় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ও রুয়েটের পতাকা উত্তোলনসহ বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে দিবসটির শুভ উদ্বোধন করা হয়। এরপর মহান মুক্তিযুদ্ধে রুয়েটের শহীদ শিক্ষার্থীদের কবর জিয়ারত করা হয় এবং দেশ ও জাতির উন্নয়নে দোয়া কামনা করা হয়।
বেলা সাড়ে দশটায় রুয়েটের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে আনন্দ র্যালি বের করা হয়। আনন্দ র্যালি শেষে রুয়েটের প্রশাসনিক ভবনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য প্রফেসর মোহাম্মদ তানজিমউদ্দিন খান। অনুষ্ঠানে পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রুয়েটের উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম আব্দুর রাজ্জাক। ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ রবিউল ইসলাম সরকারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফ্যাকাল্টি ডিন, রেজিস্টার, শিক্ষকবৃন্দ, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য মোহাম্মদ তানজিমউদ্দিন বলেন, “প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইউজিসি (UGC) খুব সীমিত ক্ষমতাসম্পন্ন। আমাদের নির্ভর করতে হয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপর। বর্তমানে ৬১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা বাজেট প্রস্তাব করা হলেও, বরাদ্দ পাওয়া গেছে মাত্র ৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। একটি দেশের শিক্ষাখাতে বাজেট যদি জিডিপির ২ শতাংশেরও নিচে থাকে, তবে সে দেশের শিক্ষাখাতে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো হওয়া উচিত গবেষণামুখী। রুয়েট সবসময় গবেষণায় অবদান রেখে এসেছে এবং বহু ইনোভেটর তৈরি করেছে। তবে ইনোভেটর হতে হলে সবচেয়ে জরুরি হলো সংশয়বাদী হওয়া, প্রশ্ন করা, খুঁজে বের করা।”
অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষক রুয়েট উপাচার্য ড. এস এম আব্দুর রাজ্জাক বলেন,”আজকের এই অগ্রযাত্রার মুহূর্তে আমরা স্মরণ করছি আমাদের সেই ভিশনারি মানুষদের, যারা বিভিন্ন পর্যায়ে অবদান রেখে রুয়েটকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছেন। তাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রম, প্রজ্ঞা এবং ত্যাগ আমাদের আজকের সাফল্যের ভিত গড়ে দিয়েছে। তাঁদের প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। আমরা বিশ্বাস করি—দেশ তখনই প্রকৃত অর্থে এগিয়ে যাবে, যখন আমরা দেশীয় প্রযুক্তি উদ্ভাবনে সফল হবো।”
এছাড়াও অনুষ্ঠানকে সাফল্যমন্ডিত করতে যারা অবদান রেখেছেন এবং বিআইটি থেকে রুয়েট প্রতিষ্ঠায় অগ্রগামী অংশীজনদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন আজকের অনুষ্ঠানের সভাপতি ড. রবিউল ইসলাম সরকার।
এদিকে দিবসটি উপলক্ষে সকাল ৮.৩০ টা নাগাদ রুয়েটের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী পোস্টার প্রেজেন্টেশনের আয়োজন করা হয় রুয়েট অডিটোরিয়ামে। পরে বিজয়ীদের মাঝে সার্টিফিকেট ও ক্রেস্ট তুলে দেয়া হয়। এছাড়াও ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের সহায়তায় সেমিনার কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস প্রীতি বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়। বিতর্ক প্রতিযোগিতার মূল প্রতিপাদ্য ছিল বিএসসি প্রকৌশলীদের যৌক্তিক আন্দোলনের সমর্থনে সচেতনতা তৈরি করা।
উল্লেখ্য বিএসসি প্রকৌশলীদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন কে সমর্থন ও স্বীকৃতিস্বরূপ বিকেলে অনুষ্ঠিতব্য দিবসটির সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাদ দেওয়া হয়েছে।