
বিশ্ব রাজনীতিতে মুসলিমদের অবদান সীমিত। বিশ্বনেতাদের মধ্যে এক জালেম ক্ষমতায় থাকাকালীন গাজাবাসীর উপর যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে ৫০ হাজার মানুষকে মেরে ফেললো। আরেক জালিম ক্ষমতায় এসে বলতেছে ২০ লাখ গাজাবাসীদেরকে উচ্ছেদ কর। এখানে আমরা রিয়েল এস্টেট প্রোপার্টি করবো । সম্ভবত এই প্ল্যানটা তারা এক্সেকিউটও করে ফেলবে ।
গাজাবাসীর অধিকার নিয়ে সচেতন এরকম কয়েকজনের পোস্ট আমি
ফেসবুক,
এক্স (টুইটার),
লিংকডইনে দেখার চেষ্টা করলাম। আমি বোঝার চেষ্টা করলাম এর ন্যুনতম একটা সমাধানের জন্য, একটা ছোট্ট আশার জন্য কার দিকে তাকায় আছে।
৯০% পোস্ট মোটামুটি নিষ্ফল কান্নাকাটি, আফসোস, অভিশাপ এসব নিয়ে। কিছু পোস্ট দেখলাম কেউ বলতেছে এলন মাস্কের সাথে বসতে। সে তো কাইন্ড অফ শ্যাডো প্রেসিডেন্ট। তাঁর মনে যদি গাজাবাসীর জন্য একটু দয়া হয় তাহলে হয়ত কিছু একটা হবে।
কেউ বলতেছে ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে যাইতে। কেউ সাজেস্ট করলো চায়নার হাতেপায়ে ধরতে। কেউ আবার বললো, ইজরায়েলরেই যদি হাতে পায়ে ধরে একটু বোঝানো যায় আর কি!
আমি অবাক হয়ে দেখলাম, একটা সিঙ্গেল পোস্টেও একজন মুসলিম শাসক/নেতা/মিলিটারি লিডারের নাম কেউ প্রপোজ করলো না যার কাছে একটা সামান্য সমাধানের আশাও করা যায় ! না সৌদি লিডার, না তুরস্ক, না মিডল ইষ্টের অন্য কোন নেতা।
ওয়ার্ল্ড পলিটিকসে আমাদের ভ্যালু-জায়গাটা ঠিক কোন জায়গাতে এটা থেকে বোঝা যায়।
বিশ্বের টপ সামরিক ইনভেনশনে কোন প্র্যাকটিসিং মুসলিম নাই। আইটি/ইঞ্জিনিয়ারিং/মেডিকেল/ইকোনমিকসে কোন প্র্যাকটিসিং মুসলিম নাই । বড় ব্যবসায়ী বিলিওনিয়ারদের মধ্যে কোন প্র্যাক্টিসিং মুসলিম নাই। কোন টপ সামরিক নেতাদের মধ্যে কোন প্র্যাকটিসিং মুসলিম নাই।
শিক্ষা-চিকিৎসা-আইটি-মিলিটারি একটা জায়গাতেও বিশ্বের জন্য আমরা এমন ভ্যালু এড করি নাই যার জন্য কাউকে আমাদের দরকার আছে। প্রতিটা মুসলিম দেশ বিশ্বের জন্য একটা বাজার ছাড়া কিছুই না। আমাদেরকে দরকার শুধুমাত্র আমাদের কাছে প্রোডাক্ট বেচার জন্য।
আজকে যদি মিডল ইস্টে তেলের সোর্স না থাকত তাহলে মিডল ইস্টের লোকজনকে না খেয়ে থাকা লাগতো। বড় বড় বিল্ডিং-লাক্সারি ইয়ট, গাড়ি কেনা ছাড়া নিজেরা নিজেদের অর্থনীতির জন্য নিজে থেকে কোন ভ্যালুই এড করতে পারেনি।
প্রতিটা ওয়াজে-প্রতিটা নসিহতে শুধুমাত্র নামাজ-রোজা-হজ-যাকাতের মত স্পিরিচুয়াল দিক নিয়ে কথা বলা হয় । তারপরও দেশ ভর্তি চোর-চোট্টা, বাটপার দিয়ে ভরা। এখনো পাশ্চাত্য শিক্ষা-টেকনোলজি-মেডিকেলসহ অন্যান্য শিক্ষায় শিক্ষিত হবার দিকগুলো উপেক্ষিত।
দিন শেষে বেটার রিজিকের জন্য সেই পশ্চিমাদের গড়া অর্থনীতি, তাদের আর্থিক প্রতিষ্ঠান, তাদের টেকনোলজি, তাদের ভিক্ষা, দয়া দাক্ষিন্যের দিকে তাকায় থাকতে হয় ।
পশ্চিমাদের ভিক্ষা ছাড়া দেশের বাজেট করা যায় না। ড. মুহাম্মদ ইউনুস ভিক্ষা আনার জন্য পাগলের মত এই দেশে সে দেশে লোক পাঠাচ্ছেন। তারা ভিক্ষা দেয়া বন্ধ করলে রিজার্ভে টান পড়ে, জিনিসপত্রের দাম বাড়ে।
আজকে যদি আমাদের হাতে এমন কোন টেকনোলজি থাকত যেটা বিশ্বের জন্য মোটামুটি অপরিহার্য, আজকে যদি আমাদের এমন কোন ব্যবসায়িক নেতা থাকতো যিনি বিশ্বের অর্থনীটিকে নাড়িয়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখেন, আজকে মিডল ইষ্টের একটা দেশেরও যদি নিউক্লিয়ার আর্ম থাকত এবং শক্তিশালী মিলিটারি থাকত যারা ইজরায়েলকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মত ক্ষমতা রাখে, তাহলে কি ইসরায়েল কি এত সহজে সব কিছু করে ফেলতে পারতো ?
অর্থননীতি, টেকনোলজি, শিক্ষা, সামরিক শক্তি এগুলোতে সক্ষমতা না বাড়লে আমাদের কখনোই আল্টিমেট মুক্তি আসবে না ।
এভাবে চললে সারাদিন কাফের-মুশরিকদের গালাগালি করে, দিন শেষে কাফের-মুশরিকদের হাতে-পায়ে ধরতে হবে নিজেদের সমস্যা সমাধানের জন্য।
শাহরিয়ার আহমেদ শাদিব এর ফেসবুক পোস্ট থেকে সংকলিত (ঈষৎ পরিমার্জিত)।