যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ৭৯তম জন্মদিন ও সামরিক বাহিনীর ২৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সামরিক কুচকাওয়াজের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে বিশাল গণবিক্ষোভ। ‘নো কিংস’ শ্লোগানে ছড়িয়ে পড়া এই আন্দোলনে অন্তত ২ হাজার শহরে অংশ নেয় প্রায় ৫০ লাখ মানুষ, যা ২০২৫ সালের যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ সংগঠিত গণআন্দোলন বলে বিশ্লেষকরা মন্তব্য করছেন।
বিক্ষোভের মূল প্রতিবাদ ছিল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ব্যক্তিকেন্দ্রিক ক্ষমতাবাদ এবং সামরিক বাহিনী ব্যবহার করে গণতন্ত্রকে দমন করার চেষ্টা। ওয়াশিংটন ডিসি, নিউইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলেস, ফিলাডেলফিয়া ও অন্যান্য বড় শহরে লাখ লাখ বিক্ষোভকারী রাস্তা ঘিরে ধরেন। নিউইয়র্ক সিটিতে প্রায় ২ লাখ, ফিলাডেলফিয়ায় ১ লাখ এবং লস অ্যাঞ্জেলেসে ১.৫ থেকে ২ লাখ মানুষের উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম।
লস অ্যাঞ্জেলেসে বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ থাকলেও সন্ধ্যার পর উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। পুলিশের টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট ব্যবহারে অন্তত ৪০০ জন বিক্ষোভকারী গ্রেপ্তার হন, আহত হন শতাধিক। স্থানীয় পুলিশের মুখপাত্র জানান, “এই পরিস্থিতি পরিকল্পিত বিরোধ নয়, তবে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা ছিল।”
ট্রাম্প প্রশাসন লস অ্যাঞ্জেলেসে সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দেয়। ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসাম মোতায়েনকৃত প্রায় ৭০০ মেরিন ও ২ হাজার ন্যাশনাল গার্ডকে অবৈধ ও সংবিধানবিরোধী বলে নিন্দা জানান।
ওয়াশিংটনে ট্রাম্প প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজন করা সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নেয় ছয় হাজারের বেশি সেনা সদস্য, যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার এবং ট্যাংক। কুচকাওয়াজে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন,
“যারা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, তাদের কঠোর প্রতিরোধ করা হবে।”
(AP News, ১৪ জুন) তবে RefuseFascism.org-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা সানসারা টেইলর বলেন,
“আমরা এই দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে গর্জন করেছি। আমেরিকা রাজত্বের দেশ নয়, গণতন্ত্রের দেশ।”
(The Guardian, ১৪ জুন) রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই আন্দোলন শুধু ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নয়, বরং গণতন্ত্রের রক্ষায় গণজাগরণের নিদর্শন। বিশেষজ্ঞরা এটিকে ১৯৬৫ সালের সেলমা নাগরিক অধিকার আন্দোলনের সঙ্গে তুলনা করছেন, যেখানে প্রেসিডেন্ট জনসন ফেডারেল সেনা মোতায়েন করেছিলেন।
তথ্যসূত্র: The Guardian: ১৪-১৫ জুন, AP News: ১৪ জুন Reuters: ১৫ জুন