রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে সামরিক প্রশিক্ষণ চলাকালে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় দগ্ধ ও আহতদের উন্নত চিকিৎসা সহায়তা দিতে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. চোং সি জ্যাক ঢাকায় এসেছেন। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) রাতেই তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান, যেখানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানান। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসায় বাংলাদেশের চিকিৎসক দলকে পরামর্শ ও সহযোগিতা করতেই ডা. চোং সি জ্যাকের আগমন।
ডা. চোং সি জ্যাকের সঙ্গে আরও তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আজ বুধবার সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন। তারা হলেন সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র ডিরেক্টর বিজয়া রাও, পুন লাই কুয়ান এবং লিম ইউ হান জোভান। এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল ঢাকায় পৌঁছেই সকাল থেকে রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশের চিকিৎসকদের সঙ্গে এক বৈঠকে অংশ নেয়। বৈঠকে তারা আহতদের শারীরিক অবস্থা পর্যালোচনা করছেন এবং প্রয়োজনে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুপারিশ করবেন বলেও জানানো হয়েছে।
জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক ডা. মইনুল আহসান জানান, সিঙ্গাপুর থেকে আগত চিকিৎসকরা ইতোমধ্যেই চিকিৎসা কার্যক্রমে যুক্ত হয়েছেন এবং একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে দগ্ধ রোগীদের পর্যবেক্ষণ করছেন। এ পর্যন্ত জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ৪৪ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন, যাদের মধ্যে ১২ জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় আইসিইউতে রাখা হয়েছে। আহতদের মধ্যে কেউ কেউ সিএমএইচ ও উত্তরার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন, সেখানেও এই চিকিৎসক দল পরিদর্শনে যাবেন।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান জানান, সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের সঙ্গে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আগে থেকেই একটি সমঝোতা স্মারক (MoU) রয়েছে। সেই সমঝোতা অনুযায়ী এই জরুরি সময়ে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে। দুর্ঘটনার পর দ্রুত কেস রিপোর্ট পাঠিয়ে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় এবং তাদের মতামতের ভিত্তিতেই এই উচ্চপর্যায়ের চিকিৎসক দলকে বাংলাদেশে আনা হয়।
দগ্ধদের জীবন রক্ষায় এবং উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের যৌথ চিকিৎসা উদ্যোগে আশার আলো দেখছেন স্বজনরা। চিকিৎসক দল শুধু পরামর্শেই সীমাবদ্ধ থাকবেন না, প্রয়োজন হলে তারা সরাসরি চিকিৎসাতেও অংশ নেবেন বলে জানা গেছে।