সীসার ছোবলে শিশু মস্তিষ্ক: ঝুঁকিতে আগামীর ভবিষ্যৎ - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:
শিরোনামঃ
রাকসু নির্বাচনের প্রচারণার শেষ দিন আজ, পরশু ভোটগ্রহণ তরুণ কলাম লেখক ফোরামের কুবি শাখার নেতৃত্বে মাসুম–সাইদুল সড়ক সংস্কার ও রেলপথ চালুর দাবিতে উপাচার্য বরাবর ইবি ছাত্রদলের স্মারকলিপি প্রদান গাছের সুরক্ষায় গ্রীন ভয়েস সদস্যদের হাতে পাঁচ প্রকার সামগ্রী প্রদান করলেন অধ্যক্ষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ভর্তি আবেদন শুরু ২৯ অক্টোবর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিক্যাল সেবার সময় রাত ৮টা পর্যন্ত বাড়ানো হলো রাবিতে নবীনবরণ: শিক্ষার্থীদের সম্ভাবনা বাস্তবায়নে যুক্তি ও শৃঙ্খলার আহ্বান উপাচার্যের জাবিতে প্রাণ রসায়ন বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীদের র‍্যাগিং বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যারিয়ার ক্লাবের নতুন কমিটি ঘোষণা বিদেশে নতুন আগত বাংলাদেশিদের প্রতি অমানবিক আচরণ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন ফজলে এলাহী

সীসার ছোবলে শিশু মস্তিষ্ক: ঝুঁকিতে আগামীর ভবিষ্যৎ

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট সময় বুধবার, ৬ আগস্ট, ২০২৫
  • ১৪৫ বার দেখা হয়েছে

সীসা-নির্ভর শিল্প প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন উৎস থেকে ছড়িয়ে পড়া দূষণে ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে দেশের শিশু জনসংখ্যা। রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় বসবাসরত শিশুদের রক্তে উদ্বেগজনক মাত্রার চেয়েও দ্বিগুণ সীসা পাওয়া গেছে, যা তাদের মস্তিষ্কের বিকাশে স্থায়ীভাবে প্রভাব ফেলছে।

আজ বুধবার আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) আয়োজিত এক বিশেষ আলোচনায় উপস্থাপিত গবেষণা তথ্য অনুযায়ী, সীসা-নির্ভর কারখানার এক কিলোমিটারের মধ্যে বসবাসকারী শিশুদের রক্তে সীসার মাত্রা অন্যদের তুলনায় গড়ে ৪৩ শতাংশ বেশি। ২০২২-২৪ সাল পর্যন্ত পরিচালিত এক গবেষণায় ৫০০ শিশুর নমুনার মধ্যে ৯৮ শতাংশ শিশুর রক্তে সীসা পাওয়া গেছে, যার মধ্যম মাত্রা ছিল ৬৭ মাইক্রোগ্রাম/লিটার। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসি’র মানদণ্ডে ৩৫ মাইক্রোগ্রাম/লিটারকেই উদ্বেগজনক হিসেবে ধরা হয়।

গবেষণায় উঠে এসেছে, সীসা দূষণের প্রধান উৎস হলো লেড-অ্যাসিড ব্যাটারি উৎপাদন ও রিসাইক্লিং কারখানা, সীসা গলানোর কেন্দ্র, ধূমপান, ধূলিকণা, সীসাযুক্ত প্রসাধনী ও রান্নার পাত্র।

২০০৯-২০১২ সালের একটি পুরোনো গবেষণায় দেখা যায়, ঢাকার বস্তি এলাকায় দুই বছরের নিচে বয়সী ৮৭ শতাংশ শিশুর রক্তে ৫০ মাইক্রোগ্রাম/লিটারের বেশি সীসা ছিল, যা তাদের স্বাভাবিক মানসিক ও শারীরিক বিকাশে গুরুতর বাধা সৃষ্টি করে।

তবে আশার দিকও রয়েছে। আইসিডিডিআর,বি’র আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৯ সালে যেখানে ৪৭ শতাংশ হলুদের নমুনায় সীসা ছিল, ২০২১ সালের মধ্যে তা প্রায় শূন্যে নেমে এসেছে।

আইসিডিডিআর,বি’র হেলথ সিস্টেমস অ্যান্ড পপুলেশন স্টাডিজ ডিভিশনের জ্যেষ্ঠ পরিচালক সারাহ স্যালওয়ে বলেন, “সীসা দূষণ বাংলাদেশের একটি বড় জনস্বাস্থ্য সমস্যা, যা প্রায়ই উপেক্ষিত থাকে। বিশেষ করে শিল্প কারখানার আশপাশের শিশুরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।”

যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ও আইসিডিডিআর,বি’র সাবেক পরিচালক স্টিভ লুবি বলেন, “সীসা শিশুদের মস্তিষ্কের গঠন ও বিকাশ মারাত্মকভাবে ব্যাহত করে। এটি কেবল একটি প্রজন্ম নয়, বরং আগামী প্রজন্মের সম্ভাবনাও ধ্বংস করে দিতে পারে।”

তিনি আরও জানান, সীসা বাতাস, খাবার, ধূলিকণা এমনকি গর্ভাবস্থায় প্লাসেন্টার মাধ্যমেও শরীরে প্রবেশ করে। তাই এ দূষণ নিয়ন্ত্রণে উৎসগুলো বন্ধ করাই একমাত্র পথ।

প্রকল্প সমন্বয়ক মো. মাহবুবুর রহমান জানান, সীসা দূষণের প্রধান উৎস হিসেবে ব্যাটারি কারখানা, সীসাযুক্ত রঙ, প্রসাধনী ও রান্নার পাত্র চিহ্নিত হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আইসিডিডিআর,বি’র নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ বলেন, “সীসা শিশুদের মস্তিষ্কের পরিপূর্ণ বিকাশ বাধাগ্রস্ত করে এবং পুষ্টিহীনতা সৃষ্টি করে, যা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশকে পিছিয়ে দিতে পারে। আমাদের দৃঢ় সংকল্প নিয়ে সীসা নিঃসরণকারী উৎসগুলো বন্ধ করতেই হবে।”

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT