লাদাখে রাজ্যের মর্যাদার দাবিতে সহিংস বিক্ষোভে নিহত ৪, উত্তেজনা ছড়িয়েছে পুরো অঞ্চলে - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:
শিরোনামঃ
জাবিতে প্রাণ রসায়ন বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীদের র‍্যাগিং বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যারিয়ার ক্লাবের নতুন কমিটি ঘোষণা বিদেশে নতুন আগত বাংলাদেশিদের প্রতি অমানবিক আচরণ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন ফজলে এলাহী সাবেক সেনাকর্মকর্তার জবানিতে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর প্রকৃত চিত্র কাতার–সৌদি মধ্যস্থতায় পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাত ‘আপাতত স্থগিত’ করল আফগানিস্তান পাকিস্তান আবারও আফগান সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করলে আফগান বাহিনী জবাব দিতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত বালিয়াকান্দিতে টাইফয়েড প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সের ক্লাস করতে এসে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা আটক কুবির তিন শিক্ষার্থী নোবিপ্রবি মডেল ইউনাইটেড নেশনস কনফারেন্সে পুরস্কার জয়ী রাজবাড়ীর কালুখালীর গুণী সংগীতশিল্পী জাহিদ হাসানের মৃত্যু

লাদাখে রাজ্যের মর্যাদার দাবিতে সহিংস বিক্ষোভে নিহত ৪, উত্তেজনা ছড়িয়েছে পুরো অঞ্চলে

আন্তর্জাাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৭৮ বার দেখা হয়েছে
লাদাখ বিক্ষোভ

আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে আহত কমপক্ষে ৫৯, লেহ শহরে কারফিউ জারি, সনম ওয়াংচুককে দায়ী করল কেন্দ্র

লাদাখে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ও ষষ্ঠ তপশীলভুক্ত বিশেষ স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে চলমান আন্দোলন বুধবার ভয়াবহ সহিংসতায় রূপ নেয়। লেহ শহরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে অন্তত চার জন নিহত হন এবং আহত হন কমপক্ষে ৫৯ জন, যাদের মধ্যে প্রায় ৩০ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। সহিংসতার পর লেহ শহরে কারফিউ জারি করা হয় এবং কারগিলে ১৪৪ ধারা কার্যকর হয়। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত পুরো অঞ্চলে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে, মোতায়েন করা হয়েছে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী।

২০১৯ সালে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা ৩৭০ ধারা বাতিলের পর লাদাখকে পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করা হয়। তবে পরবর্তীতে রাজ্যের মর্যাদা এবং ষষ্ঠ তপশীলভুক্ত সাংবিধানিক সুরক্ষার দাবিতে স্থানীয়দের অসন্তোষ বাড়তে থাকে। লাদাখ এপেক্স বডি ও কারগিল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স কেন্দ্রের সঙ্গে একাধিক দফায় বৈঠক করলেও কোনো সমাধান হয়নি। ফলে এ দাবিকে ঘিরে আন্দোলন তীব্রতর হয়।

এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন পরিবেশকর্মী ও শিক্ষাবিদ সনম ওয়াংচুক, যিনি শান্তিপূর্ণ অনশন ও পদযাত্রার মাধ্যমে বিষয়টি সামনে আনেন। চলতি মাসের ১০ সেপ্টেম্বর থেকে লাদাখে নতুন করে ১৫ জন অনশন শুরু করেন। মঙ্গলবার কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়লে আন্দোলনকারীদের ক্ষোভ বাড়ে এবং বুধবার সকালে শ’য়ে শ’য়ে মানুষ লেহ শহরে হরতালের ডাক দিয়ে রাস্তায় নামে। এরপর অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর ছড়িয়ে পড়ে। বিজেপির কার্যালয়ে হামলা চালানো হয় এবং বেশ কয়েকটি গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে, তাতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। অন্তত ৪০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সোনম ওয়াংচুক (মাঝে, চশমা পরিহিত) পূর্ণ রাজ্যের দাবিতে বারেবারে আন্দোলনে নেমেছেন

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই সহিংসতার জন্য সরাসরি সনম ওয়াংচুককে দায়ী করেছে। মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ, ওয়াংচুক আরব স্প্রিং ও নেপালের আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে মানুষকে উসকে দিয়েছেন। এরই মধ্যে তাঁর প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সংগঠন SECMOL-এর বিদেশি অনুদান গ্রহণের অনুমোদন বাতিল করা হয়েছে এবং সিবিআই তদন্ত শুরু করেছে। ওয়াংচুক অবশ্য সহিংসতার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন এবং যুবসমাজকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

বিরোধী কংগ্রেস সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করেছে, আর বিজেপি অভিযোগ করেছে বিরোধীদের ষড়যন্ত্রে সহিংসতা ছড়ানো হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ১৯৮৯ সালে রাজ্যের মর্যাদার দাবিতে পুলিশের গুলিতে তিন জন নিহত হওয়ার পর এটিই লাদাখের সবচেয়ে বড় সহিংসতা।

লেহ ও কারগিলে এখন দোকানপাট বন্ধ, সড়কে যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। পুলিশ ও সেনার টহল অব্যাহত রয়েছে, হাসপাতালগুলোতে আহতদের চিকিৎসা চলছে। প্রশাসন সাধারণ মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে এবং পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে।

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT