গাজায় ত্রাণ প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার পর এবার বিপুল সংখ্যক রিজার্ভ সেনা তলবের পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল। দেশটির গণমাধ্যমের বরাতে আল-জাজিরা জানিয়েছে, ২০২৫ সাল হতে পারে নতুন যুদ্ধের বছর।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে গাজায় ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ করার পর, ওয়াশিংটনের কাছ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র সহায়তা পেয়েছে ইসরায়েল। এই সহায়তার মধ্যে রয়েছে ২ হাজার পাউন্ডের শক্তিশালী বোমা, যা আগের বাইডেন প্রশাসন আটকে রেখেছিল। বিপুল পরিমাণ মার্কিন অস্ত্র ও ট্রাম্পের রাজনৈতিক সমর্থন পেয়ে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
গাজায় ১৫ মাসের যুদ্ধে চরম ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে, প্রাণ হারিয়েছে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি যোদ্ধা। হামাস ও হেজবুল্লাহর মতো ইসরায়েলবিরোধী সংগঠনগুলোর সামরিক শক্তিও অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে রিজার্ভ সেনাদের তলবের সিদ্ধান্তের পেছনে মূল কারণ কী হতে পারে, তা নিয়ে নানা গুঞ্জন চলছে।
বিশ্লেষকদের ধারণা, ইসরায়েল ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা করছে। এমনটি ঘটলে মধ্যপ্রাচ্যে বড় ধরনের সংঘর্ষ বেঁধে যেতে পারে। পাশাপাশি, গাজার ফিলিস্তিনিদের মিসরে পাঠানোর প্রচেষ্টা সংঘাতের আরেকটি কারণ হয়ে উঠতে পারে, যা মিসর ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলবে।
এছাড়া, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর গোলান মালভূমি ও দেশটির দ্রুজ সম্প্রদায়কে ইসরায়েলের সমর্থন দেওয়াকে কেন্দ্র করেও নতুন উত্তেজনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে ক্ষমতায় টিকে থাকতে নেতানিয়াহু আবার যুদ্ধের পথ বেছে নিতে পারেন বলে মনে করছেন অনেকে।
অন্যদিকে, গাজায় হামাসের হাতে আটক ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তির দাবিতে দেশটির নাগরিকদের বিক্ষোভ আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। বিক্ষোভকারীরা সরকারের মন্ত্রীদের বাড়ি পর্যন্ত গিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। বিরোধীদলীয় নেতারা অভিযোগ তুলেছেন, নেতানিয়াহু তার রাজনৈতিক স্বার্থে ইসরায়েলি বন্দিদের জীবনের ঝুঁকি বাড়াচ্ছেন।
ইসরায়েলের ডেমোক্র্যাট পার্টির নেতা ইয়াইর গোলান বলেন, “নেতানিয়াহুর কাছে সৈন্যদের জীবন কিংবা জিম্মিদের নিরাপত্তার চেয়ে তার ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক স্বার্থই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তিনি গাজায় যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপের আলোচনায় ইচ্ছাকৃতভাবে অংশ নিচ্ছেন না।”