নকীব আশরাফ চৌধুরীর রেইপ করার আকাঙ্ক্ষা আর ফজলু কমান্ডারের “রাজাকারের বাচ্চা” গালি কোন আলাদা জিনিস না। দুইটাই আওয়ামী লীগের প্রোডাকশন। আওয়ামী লীগকে ইলেকশনে আনার জন্য ম্যালা কোশেশ করসে তারা বিগত ৮টা মাস, পারে নাই।
পারে নাই এই প্রজন্মের নাগরিকদের প্রতিরোধের মুখে। ফলে, ফ্রাস্ট্রেশান ঝাড়ার তো একটা জায়গা লাগবে, সেটাই তারা করতেসে কেউ ফেইসবুক পোস্টে আর কেউ টকশোতে।
কিন্তু এই ফজলু বা নকীব আশরাফদের ব্যাপারে আমরা একটা জিনিস মিস করতেসি।
আওয়ামী লীগের নিজের কোন ভয়েস নাই, ব্যাপারটা আমরা ভুইলা গেসি।
আওয়ামী লীগ হইলো বাংলাদেশে দিল্লীর ভয়েস। দিল্লী আমাদের যা শুনাইতে চায়, আমরা আওয়ামী লীগের মুখ থেকে তাই শুনি।
দিল্লী যখন ঠিক করে, জামাত শিবির নামে বাংলাদেশে মুসলমান কো*পাবে, তখন তারা লীগকে দিয়ে জামাত শিবির ট্যাগ দেয়।
দিল্লী যখন ভাবে, জঙ্গী ট্যাগ দিয়ে র্যাবের আলেপউদ্দিনদেরকে দিয়ে বাংলাদেশের মেয়েদেরকে রেইপ করাবে, তখন লীগকে দিয়ে জঙ্গী ট্যাগ দেয়।
দিল্লী যখন ভাবে, তারেক জিয়া আর লুতফুজ্জামান বাবরকে জঙ্গী মদদদাতা হিসাবে ট্যাগ দিয়ে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসাবে, তখন তারা আওয়ামী লীগকে দিয়া জঙ্গী মদদদাতা ট্যাগ দেয়।
দিল্লী যখন ভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বইলা বাংলাদেশের জনগনের স্বাধীন থাকার আকাঙ্ক্ষাকে বুলেটের স্রোতে উড়ায় নিয়ে যাবে, দিল্লী তখন বাংলাদেশের মানুষকে রাজাকার, পাকিস্তানপন্থী, এইসব ট্যাগ দেয়, আওয়ামী লীগের মাধ্যমে।
বাংলাদেশের শত্রু মূলত এই দেশে লুকায় থাকা ভারতপন্থীরা। এরা বিভিন্ন চেহারায় লুকায়ে থাকে। কেউ হয় রবীন্দ্রপুজারী সনজীদা, কেউ হয় ইসলামোফোব মাহফুজ আনাম। কেউ হয় আবার বিরাট ইসলামিস্ট বাংলা ভাই, শায়খ আব্দুর রহমান, কেউ হয় আবার শাহবাগী হুজুর ফরিদউদ্দীন মাসুদ। কেউ হয় ষাড় মীর জাফর ইকবাল যিনি রাজনীতি বোঝেন না, খালি বোঝেন ধইরা ধইরা জবাই কর। কেউ হয় আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুল কাদের, কেউ হয় সাদ্দাম, কেউ হয় নকীব আশরাফ, কেউ ফজলু। কেউ কেউ হয় বিএনপির শেখ মুজিবুর রহমান। ব্যবসাপাতি সবই আওয়ামী লীগ আমলে চলে, খালি আন্দোলন শুরু হওয়ার সাথে সাথে তারা সবার আগে এরেস্ট হয়, আন্দোলন থামায় দিয়ে জেল থেকে বাইর হয়ে আসে। মাঝখান থেকে রাস্তায় সাধারন কর্মী মরে, জেল খাটে। তাদের কিছু হয় না। কেউ আবার হয় তীব্র ভারতবিরোধী রাজনৈতিক নেতা, বুদ্ধিজীবী, ইসকন লাভার মুসলমান, নওফেলের মত।
এই রকম অনেক চেহারার ভারতপন্থী নিয়া ভারত কাজ করে। ২০ কোটি মানুষের একটা দেশকে ১৫ বছর ধইরা সৈন্য না পাঠায়ে দখল কইরা রাখা তো যা তা ব্যাপার না।
আপনারা যারা জুলাইয়ে প্রথম রাস্তায় নামসেন, অনেকেই হয়তো জানেন না, এখন থেকে ৪ বছর আগে মোদী বাংলাদেশে আসছিল, সেই দফা মোদীকে খুশি করতে বাংলাদেশ থেকে ২৫টা লাশ ফেলে হাসিনা, যার শুরু বাইতুল মোকাররমে, আর ভয়ংকরতম রুপ দেখা যায় চট্টগ্রাম আর ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ায়।
তো সব মিলায়ে এই হরেক রকম চেহারা মিলায়েই বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রন করে দিল্লী। এদেরকে ঠিকভাবে বুঝতে যে পরিমান জ্ঞান প্রয়োজন তা সবার নাই। কিন্তু কিছু লক্ষণ আছে, যা থেকে আমরা বুঝতে পারি বাংলাদেশে কারা দিল্লীপন্থী।
লক্ষণ ১ঃ কথায় কথায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা টাইনা আনবে। ভাবখানা এমন, ১৯৭১ সাল ছাড়া দুনিয়াতে কখনো কিছু ঘটে নাই, এরচে গুরুত্বপূর্ণ কিছু আগে পরে থাকতেই পারে না। কথা শুনলে মনে হবে আপনার ঘাড়ের উপর এখনো পাকিস্তানী সৈন্য মেশিনগান নিয়া দাঁড়ায় আছে। অবশ্য বাস্তবে দেখবেন, বাসার নিচে দাঁড়ায় আছে হেলমেট পরা তার নিজের লোক।
লক্ষণ ২ঃ এরা কথায় কথায় নারীর পোশাকের স্বাধীনতা-নারীবাদ নিয়া কান্নাকাটি করবে। কিন্তু নিজেরাই দেখবেন নিজেদের বিরুদ্ধে কোন মেয়ে গেলে তারে রেইপ করার থ্রেট দেবে বা সত্যিই রেইপ করার চেষ্টা করবে। বাংলাদেশের ইতিহাসে সংগঠন হিসেবে সবচে বেশি রেইপ করসে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ বাকি সব রেইপ মিলায়ে এদের সমান হয় কিনা সন্দেহ আছে। সকালবেলা নারীবাদী বিকালবেলা রেইপিস্ট, এইটা এদের আসল চেহারা।
যাহা জায়ে গা ওয়াহা বালা/তকার কারে গা।
লক্ষণ ৩ঃ লুটপাট ও দুর্নীতি ছাড়া এরা থাকতে পারে না। যেকোন সিস্টেমে এদেরকে ঢুকাবেন, এরা চুরি করবে। টিউলিপের ব্যাপারটাই দেখেন, ব্রিটিশ সিস্টেমে গিয়াও সে চুরি করসে। ঐ যে, জাত খারাপ। যাহা জায়ে গা ওয়াহা বালা/তকার কারে গা।
লক্ষণ ৪ঃ নিজের কোন দোষ চোখে দেখে না, নিজের দলের কোন দোষও চোখে দেখে না। এই লক্ষণটা বাংলাদেশের প্রচুর সফিস্টিকেটেড ভদ্রলোকের মধ্যে আপনি পাবেন। এদের গায়ে কোন দলের লোগো আছে, ঐটা জরুরী না, খাসলতে এরা আওয়ামী লীগ, ভারতপন্থী, এইটা হইলো আসল কথা। নার্সিসিস্ট, ক্ষমতার লোভ এবং বিবেকহীনতা এদের মজ্জাগত বৈশিষ্ট্য।
বাংলাদেশে এই বৈশিষ্ট্যগুলা যার মধ্যেই দেখবেন, চারটার মধ্যে যেকোন ২টা পাইলেই ধরে নেবেন ঐটা ভারতপন্থী।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে এদের সিগনেচার মুভ হইতেসেঃ
১)মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভাঙ্গা ক্যাসেট
২)হয় নারী নির্যাতনের জুজু দেখানো, নয় তো নিজেরাই নারী নির্যাতনে নাইমা পড়া
৩)উন্নয়নের জুজু দেখায়ে দুর্নীতি জাস্টিফাই করা
৪)সংখ্যালঘুরা শেষ হয়ে যাইতেসে বলে দুনিয়া ভর শোরগোল করা, তাতে কাজ না হইলে নিজেরাই সংখ্যালঘু নির্যাতনে নাইমা পড়া
৫)সবাই জঙ্গী হইয়া যাইতেসে এমন একটা ভাব ধইরা নিজেরাই জঙ্গী পালা
৬)পাকিস্তান আইসা দেশ দখল কইরা নিলো বইলা কান্নাকাটি কইরা নিজেরা দিল্লীর দালালী কইরা বাংলাদেশকে দিল্লীর হাতে তুইলা দেয়া
এই সিগনেচারগুলা আপনি যে দলের নেতার মধ্যেই দেখেন, যার মধ্যেই দেখেন, তাকে আপনার ভারতের দালাল হিসেবে আইডেন্টিফাই করতে পারতে হবে।
শত্রু মোকাবিলার পয়লা ধাপ হইতেসে শত্রুকে চিনতে শেখা।
বাংলাদেশের জনগন এক দীর্ঘ সংগ্রামের পথ পাড়ি দিয়ে অনেক বছর পর একটা স্বাধীনতার স্বাদ পাইসে, এইটা দেশের দিল্লীদাসদের সহ্য হইতেসে না, হবেও না।
এদের বিরুদ্ধে আমাদের পূর্বপুরুষের লড়াইয়ের ইতিহাস সাড়ে তিন হাজার বছরের। আমাদের তাকদ্বীর এদের বিরুদ্ধে লড়াই করা। আমরা প্রমান করসি, আমরা পারি।
আমাদের পুরুষদের খুনের বা মেয়েদের ইজ্জতের ভয় দেখায়ে থামানো যাবে না। কারো হুমকি পোছার জন্য হাসিনারে খ্যাদাই নাই।
লিখেছেন: প্রিন্স মুহাম্মাদ সজল