দীর্ঘ পাঁচ বছর পর আবারও চীনা নাগরিকদের জন্য পর্যটন ভিসা চালু করতে যাচ্ছে ভারত। ২০২৫ সালের ২৪ জুলাই থেকে এই ভিসা কার্যক্রম শুরু হচ্ছে বলে বুধবার চীনে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে। এই পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে দুই প্রতিবেশী দেশের সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করেছে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ২০২০ সালে হিমালয় সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর ভারত-চীন সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছিল। ওই সংঘর্ষে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে, যার জেরে ভারত চীনের শত শত অ্যাপ নিষিদ্ধ করে, চীনা বিনিয়োগে কড়াকড়ি আরোপ করে এবং যাত্রী পরিবহনের রুট বন্ধ করে দেয়।
অন্যদিকে, কোভিড-১৯ মহামারীর সময় চীনও ভারতসহ অনেক দেশের নাগরিকদের জন্য ভিসা স্থগিত করেছিল। যদিও ২০২২ সাল থেকে শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের জন্য আবারও ভিসা চালু করে বেইজিং। তবে পর্যটকদের জন্য এই সুবিধা এতদিন বন্ধই ছিল। ভারতও কেবলমাত্র মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত নিজ নাগরিকদের পর্যটন ভিসা সীমিত রেখেছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে উভয় দেশ সরাসরি ফ্লাইট চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের আলোচনায় অংশ নিয়েছে, যার মধ্যে ছিল ২০২৪ সালের অক্টোবরে রাশিয়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে মুখোমুখি বৈঠক।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুও জিয়াকুন ভারত সরকারের ভিসা সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, বেইজিং এই ইতিবাচক অগ্রগতিকে গুরুত্ব দিচ্ছে এবং সম্পর্ক উন্নয়নে আরও যোগাযোগ ও সহযোগিতার দিকে এগিয়ে যেতে চায়। দুই দেশের প্রায় ৩৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধপূর্ণ, যার ইতিহাস গিয়ে ঠেকে ১৯৫০-এর দশকে। ১৯৬২ সালে এই সীমান্ত নিয়ে একটি রক্তাক্ত যুদ্ধেও জড়ায় দেশ দু’টি। এখন আবার যখন উভয় পক্ষ সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চাইছে, তখন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সরাসরি চীনের প্রতি বার্তা দিয়েছেন— সীমান্ত সমস্যা সমাধান ও সেনা প্রত্যাহার ছাড়া সম্পর্কের স্বাভাবিকতা সম্ভব নয়।
চীন ও ভারতের এই কূটনৈতিক অগ্রগতি দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে নতুন মোড় আনতে পারে।