চীনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসের সেভেন সিস্টার্স নিয়ে করা মন্তব্যের প্রতিবাদ হিসেবে ভারত বাংলাদেশকে প্রদত্ত ট্রান্স-শিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এছাড়া, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়েও এই পদক্ষেপের পেছনে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চীন সফরের সময় ড. ইউনূস বেইজিংকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রভাব বিস্তারের আহ্বান জানালেন। এই সফরের কয়েক দিন পর ভারত বাংলাদেশের ট্রান্স-শিপমেন্ট সুবিধা প্রত্যাহার করে। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর স্থলবেষ্টিত অবস্থার কারণে বাংলাদেশ সেখানে বাণিজ্য পরিচালনার জন্য একটি সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে, এমন মন্তব্য করেছিলেন ড. ইউনূস।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ভারত বাংলাদেশকে রপ্তানির জন্য প্রদত্ত ট্রান্স-শিপমেন্ট সুবিধাটি বাতিল করেছে ড. ইউনূসের ওই মন্তব্যের প্রতিশোধস্বরূপ। ট্রান্স-শিপমেন্ট সুবিধার মাধ্যমে বাংলাদেশ ভারতের মাধ্যমে স্থলপথে পণ্য রপ্তানি করতে পারতো, যার বেশিরভাগ পণ্য মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ ও অন্যান্য দেশে যেত।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, বাংলাদেশে ট্রান্স-শিপমেন্ট সুবিধার সম্প্রসারণের ফলে ভারতীয় বিমানবন্দর ও বন্দরগুলিতে যানজট সৃষ্টি হচ্ছিল এবং এতে লজিস্টিক বিলম্ব ও উচ্চ ব্যয় বাড়ছিল, যা ভারতের নিজস্ব রপ্তানির জন্য সমস্যা সৃষ্টি করছিল।
ড. ইউনূসের মন্তব্য ভারতীয় গণমাধ্যমে তীব্র সমালোচনার জন্ম দেয়। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বিক্রম মিস্ত্রি বলেন, “ঢাকার পরিবেশ দূষিত করে এমন বক্তব্য এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল”। ভারতে সরকারের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, তারা সহযোগিতা ও সুবিধা প্রদান নিয়ে একটি সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গি অনুসরণ করে থাকে।
এছাড়া, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক গত কিছু বছরে নাটকীয়ভাবে অবনতি হয়েছে, বিশেষত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের জটিলতার কারণে।