জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থা প্রধান যেকারণে ইরানে নিষিদ্ধ হলেন - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:

জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থা প্রধান যেকারণে ইরানে নিষিদ্ধ হলেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় রবিবার, ২৯ জুন, ২০২৫
  • ২৮ বার দেখা হয়েছে
আইএইএ প্রধান রাফায়েল গ্রোসিকে ইরান তাদের দেশে ঢুকতে রাজি নয়, ছবি: ফ্রান্স২৪
আইএইএ প্রধান রাফায়েল গ্রোসিকে ইরান তাদের দেশে ঢুকতে রাজি নয়, ছবি: ফ্রান্স২৪

টানা ১২ দিন যুদ্ধের পর ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ধ্বংসের লক্ষ্যবস্তু হয়েছিল। এবার জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা (আইএইএ)-এর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করার পক্ষে ভোট দিয়েছে ইরানের আইনপ্রণেতারা। বুধবার দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এই খবর জানানো হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।

ইরানের পার্লামেন্টের স্পিকার মোহাম্মদ বাঘের ঘালিবাফ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক বিবৃতিতে কঠোর ভাষায় বলেছেন, “আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা, যারা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলার সামান্যতম নিন্দা করতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছে, তারা নিজেদের আন্তর্জাতিক বিশ্বাসযোগ্যতাকে নিলামে তুলেছে।” এই সিদ্ধান্তটি কার্যকর হওয়ার জন্য এখনও গার্ডিয়ান কাউন্সিলের অনুমোদনের প্রয়োজন হবে, যা আইন যাচাই করার ক্ষমতা রাখে। যদি এই সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হলে ঘালিবাফ বলেন, “ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থা আইএইএ-এর সাথে তাদের সহযোগিতা স্থগিত করবে, যতক্ষণ না পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।”

২৯০ আসনের আইনসভায় উপস্থিত ২২১ জন আইনপ্রণেতা এই সিদ্ধান্তের পক্ষে ভোট দিয়েছেন এবং একজন বিরত ছিলেন, কোনো ভোট বিপক্ষে পড়েনি। আইএসএনএ সংবাদ সংস্থা অনুসারে, আইনপ্রণেতা আলিরেজা সালিমি বলেছেন, “এই সহযোগিতা স্থগিতের অর্থ হবে আইএইএ পরিদর্শকদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা, যদি না তারা ইরানের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সংস্থা, সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের অনুমোদন পান।”

গত বুধবার ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনাকে জানান যে, আইএইএ-এর সাথে সহযোগিতা “নিশ্চিতভাবে প্রভাবিত” হবে। বাঘাই এই সংস্থাকে অভিযুক্ত করে বলেন, ১২ জুন তারা একটি প্রস্তাব পাস করেছিল যেখানে ইরানকে তার পারমাণবিক বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘনের অভিযোগ করা হয়েছিল, যা যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলি হামলার “অন্যতম প্রধান অজুহাত” ছিল।

উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে একটি বড় বোমা হামলা চালিয়েছিল, যেখানে শীর্ষ সামরিক কমান্ডার এবং পরমাণু বিজ্ঞানীরা নিহত হয়েছিলেন। এরপর রবিবার ইসরায়েলের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ফোরদো, ইসফাহান এবং নাতানজ-এ অবস্থিত ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে নজিরবিহীন হামলা চালায়। অবশেষে গত মঙ্গলবার একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়।

বুধবারের ভোটের পর আইনপ্রণেতারা “আমেরিকার মৃত্যু হোক” এবং “ইসরায়েলের মৃত্যু হোক” স্লোগান দেন বলে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে। যুদ্ধের শুরু থেকেই ইরানি কর্মকর্তারা আইএইএ-এর তীব্র সমালোচনা করে আসছেন, কারণ তারা ইসরায়েলি হামলার নিন্দা করতে ব্যর্থ হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক পারমাণবিক নজরদারি ব্যবস্থায় একটি গুরুতর ফাটল সৃষ্টি করতে পারে এবং বিশ্বজুড়ে পারমাণবিক বিস্তার রোধের প্রচেষ্টায় নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসতে পারে।

সূত্র: ফ্রান্স২৪, এএফপি

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT