বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হিসেবে ভারত যত শক্তিশালীই হোক, তাদের বিপক্ষে জয় পেতে চায় বাংলাদেশ দল। সাধারণত প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আত্মবিশ্বাসী মন্তব্যের চেয়ে চোখে চোখ রেখে লড়াইয়ের কথাই বেশি শোনা যায়। তবে এবার ব্যতিক্রম দেখা গেল কোচ হাভিয়ের কাবরেরার কণ্ঠে।
সৌদি আরবে ক্যাম্প শেষ করে দেশে ফিরে স্প্যানিশ কোচ বললেন, “হামজার সঙ্গে দেখা করার অপেক্ষায় আছি। তার সঙ্গে বসে ভারতকে হারানোর কৌশল ঠিক করতে হবে।” তার এই মন্তব্যে ফুটবলারদের দৃঢ় মনোবলই ফুটে উঠেছে।
এর আগেই দেশে পা রেখে বাংলাদেশ দলের নতুন তারকা ফুটবলার হামজা চৌধুরী আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে বলেছেন, “ইনশাআল্লাহ আমরা উইন খরমু।” ইংল্যান্ডের শেফিল্ড ইউনাইটেডের হয়ে মাত্র ৯০ মিনিটের ম্যাচ খেলে দেশে ফেরা এই মিডফিল্ডার বাংলাদেশের শক্তি বাড়িয়ে দেবে বলে মনে করছেন কোচ কাবরেরা।
ভারতকে হারানোর আত্মবিশ্বাস
ভারত ফুটবলে উচ্চাভিলাষী এবং এই অঞ্চলের অন্যান্য দলের তুলনায় বেশ এগিয়ে। নিয়মিত এশিয়ান কাপে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাদের, সঙ্গে রয়েছে সুনীল ছেত্রীর মতো অভিজ্ঞ স্ট্রাইকার। তবে হামজা এই দলকে খুব বেশি বিশ্লেষণ করার প্রয়োজন মনে করছেন না। তার মতে, “এই দলকে হারাতে সমস্যা হবে না।”
হামজার যোগদান দলকে আরও অনুপ্রাণিত করছে। কোচ কাবরেরাও বলছেন, “হামজার অন্তর্ভুক্তি আমাদের দলকে অনেক শক্তিশালী করবে। ইউরোপ ও প্রিমিয়ার লিগের অভিজ্ঞতা নিয়ে আসা এই ফুটবলার মাঠে পার্থক্য গড়ে দিতে পারে।”
সুনীল ছেত্রীর প্রত্যাবর্তন ও উত্তেজনার পারদ
বাংলাদেশ দলে হামজার যোগদানই ভারতকে সুনীল ছেত্রীকে দলে ফেরাতে বাধ্য করেছে বলে মনে করছেন কাবরেরা। ফলে ম্যাচের আকর্ষণ আরও বেড়েছে। আগামীকাল শিলংয়ের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগে আজই বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় প্রথমবারের মতো অনুশীলনে নামবেন হামজা।
এরই মধ্যে ঢাকায় এসে দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন তিনি। আজ সকালে জাতীয় দলের ফটোসেশনে অংশ নেবেন এবং দুপুরে কোচ কাবরেরার সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন।
জাতীয় স্টেডিয়ামের সংস্কারের কারণে বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনাই এখন জাতীয় দলের হোম ভেন্যু হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এই মাঠেই লেবানন, ফিলিস্তিন, মালদ্বীপ ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। এবার সেই একই মাঠে ইংলিশ ফুটবলের অভিজ্ঞতা নিয়ে নতুন গল্প লিখতে চলেছেন হামজা চৌধুরী।
পরশু বাংলাদেশে আসার পর থেকেই তাকে নিয়ে উন্মাদনা তুঙ্গে। সোমবার পুরো দিন গণমাধ্যম, ভক্ত ও সমর্থকদের জন্য ব্যয় করেছেন তিনি। এরপর পরিবারকে সময় দিয়েছেন, দুস্থদের মধ্যে ১০ লাখ টাকার ঈদ উপহার বিতরণ করেছেন এবং স্ত্রীকে নিয়ে গ্রামের রাস্তায় ঘুরেছেন। রাতে ঢাকায় এসে জাতীয় দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন তিনি।
আগামী ম্যাচে ভারতকে হারানোর জন্য বাংলাদেশ দল প্রস্তুতি নিচ্ছে পুরো শক্তি নিয়ে। ফুটবলপ্রেমীরা এখন অপেক্ষায়, কিভাবে মাঠে লড়াই করে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করে লাল-সবুজের দল।