অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে ইউরোপে যাওয়ার উদ্যোগের অংশ হিসেবে প্রথম দফায় ৭০ জন ফিলিস্তিনি রওনা হয়েছেন। স্থানীয় সময় বুধবার (২০ মার্চ) দক্ষিণ ইসরায়েলের র্যামন বিমানবন্দর থেকে রোমানিয়ার একটি সামরিক বিমানে করে তারা ইউরোপের পথে যাত্রা করেন।
ইসরায়েলের ইংরেজি দৈনিক জেরুজালেম পোস্ট রোববার (২৩ মার্চ) জানায়, গাজা ছেড়ে যেতে ইচ্ছুক ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা অভিবাসন নীতির অংশ হিসেবে গাজার বাসিন্দাদের অন্য দেশে যাওয়ার সুযোগ তৈরি করছে। তবে সমালোচকদের মতে, এটি গাজাবাসীকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার কৌশল হতে পারে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ জানান, তারা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করছেন।
যে কোনও গাজাবাসী তৃতীয় দেশে যেতে চাইলে তাকে সেই সুযোগ দেওয়া হবে।
তিনি উল্লেখ করেন, ২০২০ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সির সময় গাজার জনসংখ্যা স্থানান্তরের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল।
এ লক্ষ্যে ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা গাজার বাসিন্দাদের তৃতীয় দেশে পাঠানোর জন্য একটি বিশেষ অধিদপ্তর গঠন করেছে।
যা কাটজের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে।
এদিকে, ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ প্রতিদিন ১০ হাজার গাজাবাসীকে স্থানান্তরের উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা দিয়েছেন।
তবে এখন পর্যন্ত কোনও তৃতীয় দেশ বড় সংখ্যক শরণার্থী গ্রহণে আনুষ্ঠানিক সম্মতি দেয়নি।
সমালোচকদের আশঙ্কা, এই কর্মসূচি আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির শামিল হতে পারে।
অন্যদিকে, ইসরায়েলি সরকার দাবি করছে, এটি সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাসেবী উদ্যোগ, যেখানে গাজাবাসীদের ‘নিরাপদ ও তত্ত্বাবধানে’ অন্য দেশে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত এই কর্মসূচি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে গাজা থেকে স্থানান্তরের অবকাঠামো তৈরি করছে।
ভূমি, সমুদ্র ও আকাশপথে স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং দ্রুতই এই কার্যক্রম পরিচালনায় একজন বিশেষ কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হবে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নতুন সামরিক অভিযানের প্রস্তুতির মধ্যে ইসরায়েল তাদের অভিবাসন পরিকল্পনায় গতি এনেছে।
তবে ফিলিস্তিনিরা একে তাদের মাতৃভূমি থেকে বিতাড়িত করার ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন।