
উত্তর প্রদেশের পিলিভিট জেলায় গভীর পুকুরে ডুবে যাওয়া একটি গাড়ি থেকে আটকে পড়া যুবককে উদ্ধার করে মানবিকতার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন স্থানীয় মাঝি মোহাম্মদ ফয়জাল। বৃহস্পতিবার দুপুরে তানাকপুর হাইওয়ের পাশে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রশংসার জোয়ার উঠেছে। স্থানীয় প্রশাসনও সাহসিকতার জন্য তাঁকে পুরস্কৃত করার উদ্যোগ নিয়েছে।
পুলিশ জানায়, শুভম তিওয়ারি নামের ওই যুবক তানাকপুর হাইওয়ে দিয়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ রাস্তার ওপর একটি শিশু চলে আসায় তাঁকে বাঁচাতে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারান তিনি। গাড়িটি রাস্তা থেকে ছিটকে গিয়ে সরাসরি পাশের একটি গভীর পুকুরে পড়ে যায় এবং কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই ডুবে যেতে শুরু করে।
পুকুরে নৌকা নিয়ে মাছ ধরছিলেন স্থানীয় মাঝি মোহাম্মদ ফয়জাল। দুর্ঘটনার শব্দ শুনে তিনি দ্রুত নৌকা নিয়ে ডুবে যাওয়া গাড়িটির দিকে ছুটে যান। গাড়ির ভেতরে আটকা থাকা চালককে তিনি জানালার ফাঁক দিয়ে টেনে বের করার চেষ্টা করেন। পানির প্রবল স্রোত ও গাড়ির ওজনের কারণে প্রথমে ব্যর্থ হলেও তিনি হাল ছাড়েননি।
এরই মধ্যে গাড়িটি পুরোপুরি তলিয়ে যায়। নৌকাও উল্টে গেলেও ফয়জাল গাড়িকে আঁকড়ে ধরে পানির নিচে হাত বাড়িয়ে শুভমকে বের করে আনতে সক্ষম হন। পরে তাঁকে পানির ওপর ধরে ভাসিয়ে রাখেন।
এসময় পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা দর্শকদের মধ্য থেকে দিনেশ কুশওয়াহা নামের আরেক যুবক পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তিনি ফয়জালকে সহায়তা করে শুভমকে নিরাপদে তীরে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
তীরে তোলার পর স্থানীয়রা শুভমকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন এবং পরে তাঁকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সময়মতো উদ্ধার না হলে চালকের মৃত্যুঝুঁকি ছিল প্রবল।

ঘটনাটি মোবাইলে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে অনলাইনে ব্যাপক সাড়া পড়ে। হাজারো মানুষ ফয়জালের নিঃস্বার্থ সাহসিকতার প্রশংসা করছেন। অনেকে তাঁদের রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মান জানানোর দাবিও তুলেছেন।
পিলিভিটের সিটি ম্যাজিস্ট্রেট বিজয়বর্ধন তোমার জানিয়েছেন, “মোহাম্মদ ফয়জাল এবং দিনেশ কুশওয়াহা নিজেদের জীবন বিপন্ন করে যে সাহসিকতা দেখিয়েছেন, তা অসাধারণ। তাঁদের আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মাননা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে।”