জাতীয় নির্বাচনের ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট অবস্থান না পাওয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। দলটির নেতাদের মতে, নির্বাচনের সময়সূচি ও রোডম্যাপ নিয়ে সরকারের বক্তব্যে অস্পষ্টতা রয়েছে, যা আরও অনিশ্চয়তা তৈরি করছে।
সোমবার (৭ এপ্রিল) রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ জানান, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য সময় চাওয়া হয়েছে।
বৈঠকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল নির্বাচনী রোডম্যাপ ও প্রয়োজনীয় সংস্কার। বিএনপি ইতোমধ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে পাঁচটি প্রস্তাবিত সংস্কার কমিশন নিয়ে দলের মতামত জমা দিয়েছে। দলটি সংস্কারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে এবং এই বিষয়ে সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করছে বলেও জানিয়েছে।
বিএনপির দাবি, নির্বাচন যাতে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হয়, সেজন্য প্রয়োজনীয় সব সংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করা দরকার। তারা মনে করে, কিছু জরুরি সংস্কার সরকার অধ্যাদেশের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে পারে, আর বাকি বিষয়গুলো পরবর্তী নির্বাচিত সংসদে আলোচনার ভিত্তিতে চূড়ান্ত করা যেতে পারে।
সূত্র জানায়, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের পর নির্বাচন ইস্যুতে দলের পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ করবে বিএনপি। প্রয়োজনে তারা কিছু কর্মসূচিও ঘোষণা করতে পারে।
প্রসঙ্গত, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এর আগে একাধিকবার বলেছেন, নির্বাচন ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে হতে পারে। কিন্তু বিএনপি এই সময়সীমাকে যথেষ্ট আশ্বাসজনক মনে করছে না। বরং তারা মনে করছে, সরকারের বক্তব্যে ধারাবাহিকতা নেই, ফলে নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরলে এই সাক্ষাৎ হবে বলে জানা গেছে। সেখানে ড. ইউনূসের সামনে দলের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও রাজনৈতিক মতামত তুলে ধরবে বিএনপি।
বৈঠকে আরও সিদ্ধান্ত হয়, পহেলা বৈশাখ (১৪ এপ্রিল) বড় পরিসরে উদযাপন করবে বিএনপি। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও মহানগরে আয়োজিত বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে দেশীয় সংস্কৃতি তুলে ধরা হবে। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলা ও গণহত্যারও তীব্র নিন্দা জানায় দলটি।
বৈঠকে অংশ নেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সেলিমা রহমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ (বীরবিক্রম) ও ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।