মিরপুরে মুস্তাফিজের জাদু, পাকিস্তানকে হারিয়ে ৯ বছরের খরা কাটাল বাংলাদেশ - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:
শিরোনামঃ
চীনে বিশ্বের বৃহত্তম বাঁধ নির্মাণ শুরু, ভারত-বাংলাদেশের উদ্বেগ বাংলাদেশের সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসায় বিনিয়োগ এর সুযোগ উত্তরায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত জুলাই গণঅভ্যুত্থান ‘২৪ বর্ষপূর্তিতে শেকৃবিতে র‍্যালি অনুষ্ঠিত জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে জাবিতে একদিনের ছুটি মাদ্রাস শিক্ষককে কুপিয়ে হত্যা, উত্তেজিত জনতার পিটুনিতে ঘাতকের মৃত্যু খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে যেভাবে “জঙ্গি” সাজিয়েছিলো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি-প্রভোস্ট প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হবে ‘মাদরাসা রেজিস্ট্যান্স ডে’ খাদ্যে বিষক্রিয়ায় অসুস্থ নেতানিয়াহু আকাশপথে মাদক পাচারের চেষ্টা, জর্ডানে ৩১০টি ড্রোন জব্দ

মিরপুরে মুস্তাফিজের জাদু, পাকিস্তানকে হারিয়ে ৯ বছরের খরা কাটাল বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় রবিবার, ২০ জুলাই, ২০২৫
  • ২৩ বার দেখা হয়েছে

মিরপুরে যেন আবারও ফিরে এলো ২০১৫ সালের সেই দিনের ঝলক। মুস্তাফিজুর রহমান বল হাতে নামতেই শুরু হয়ে যায় জাদু। ৪ ওভারে মাত্র ৬ রান দিয়ে ২ উইকেট—বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে সর্বনিম্ন ইকোনমি বোলিং পারফরম্যান্স। সেই পারফরম্যান্সের ওপর ভর করে পাকিস্তানকে মাত্র ১১০ রানে গুটিয়ে ৭ উইকেটে রাজসিক জয় তুলে নিল টাইগাররা। দীর্ঘ ৯ বছর পর টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানকে হারাল বাংলাদেশ, যার আগে সর্বশেষ জয় এসেছিল ২০১৬ সালের এশিয়া কাপে।

লাহোরের হতাশা ভুলে নিজেদের মাটিতে ফিরে যেন নতুন এক চেহারায় দেখা দিল বাংলাদেশ দল। শ্রীলঙ্কা সফরের আত্মবিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে মিরপুরে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে দুর্দান্ত সূচনা করল লিটন দাসের দল। বৃষ্টির পর পিচে জমে থাকা ময়েশ্চারকে কাজে লাগিয়ে টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত একদম সঠিক প্রমাণ করলেন অধিনায়ক। শুরু থেকেই পেসাররা নিয়মিত উইকেট তুলে নিয়ে পাকিস্তানকে চাপে ফেলেন।

ম্যাচের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই সুযোগ এসেছিল। কিন্তু ফখর জামানের ক্যাচ ফেলে দেন তাসকিন আহমেদ। তবে তার পুষিয়ে দেন পরের ওভারে, ফিরিয়ে দেন সাইম আইয়ুবকে। এরপর উইকেটের মিছিলে যোগ দেন শেখ মেহেদী, তানজিম সাকিব ও মুস্তাফিজ। ৬ ওভারের পাওয়ার প্লেতেই পাকিস্তান হারায় ৪টি উইকেট। শুধু ফখর জামানের ব্যাটে কিছুটা প্রতিরোধ আসে, তবে ৪৪ রানে থামতে হয় তাকেও, তাও রান আউটে।

শেষ ৫ উইকেটে পাকিস্তান তোলে মাত্র ৪৪ রান। ব্যর্থতার ছাপ স্পষ্ট ছিল গোটা ইনিংসে। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে তাসকিন আহমেদ ছিলেন সবচেয়ে সফল—৩.৩ ওভারে ২২ রানে ৩ উইকেট। মুস্তাফিজের অবিশ্বাস্য ৪-০-৬-২ বোলিংয়ে তৈরি হয় নতুন রেকর্ড। এছাড়া মেহেদী হাসান ও তানজিম সাকিবও ছিলেন কার্যকর। পাকিস্তানের স্কোর থেমে যায় ১১০ রানে—বাংলাদেশের বিপক্ষে এই সংস্করণে তাদের সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ।

লক্ষ্য ১১১। সহজ মনে হলেও শুরুটা সহজ ছিল না। ইনিংসের প্রথম ওভারে তানজিদ হাসান তামিম ও তৃতীয় ওভারে লিটন কুমার দাস—দুজনেই ১ রান করে ফিরে যান সালমান মির্জার বলে। ৭ রানেই ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় স্বাগতিকরা। কিন্তু এরপর ম্যাচে ফেরান পারভেজ হোসেন ইমন ও তাওহিদ হৃদয়। উইকেট বুঝে দেখেশুনে ব্যাট করে গড়েন ৭৩ রানের জুটি।

হৃদয় ৩৬ রান করে আউট হলেও পারভেজ ইমন ছিলেন অবিচল। ৩৯ বলে ৫৬ রান করে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন। তার ইনিংসে ছিল ৫টি ছয় ও ৩টি চার। শেষদিকে জাকের আলি অনিক ১০ বলে ১৫ রান করে তাকে সঙ্গ দেন। দুজনে ১৮ বলে ৩২ রানের জুটি গড়েন এবং ১৫.৩ ওভারে জয় নিশ্চিত করেন।

এই জয় বাংলাদেশের জন্য শুধু একটি ম্যাচ জয় নয়—এটি আত্মবিশ্বাস ফেরানোর ম্যাচ, কন্ডিশন কাজে লাগানোর ম্যাচ, এবং সর্বোপরি দীর্ঘ ৯ বছরের অপেক্ষার অবসানের ম্যাচ। ম্যাচজয়ী পারফরম্যান্সে ম্যাচসেরা হন পারভেজ ইমন, তবে মুস্তাফিজের রেকর্ড গড়া স্পেলও থাকবে এই ম্যাচের স্মরণীয় অধ্যায় হিসেবে। ফিল্ডিং, বোলিং, ব্যাটিং—তিন বিভাগেই ছিলো একাত্মতা, ছিলো শৃঙ্খলা।

সিরিজে এখন ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে বাংলাদেশ। পরের ম্যাচেও যদি এই ছন্দ ধরে রাখা যায়, তাহলে সিরিজ জয়ের স্বপ্নও ধরা দিতে পারে খুব কাছেই। বাংলাদেশের ক্রিকেটে আবারও জয়ের সুবাতাস বইছে, আর সেই হাওয়া উঠে এসেছে মুস্তাফিজ-তাসকিন-ইমনদের কাঁধে ভর করেই। সাবাস বাংলাদেশ!

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT