বাংলাদেশ-চীন কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরপূর্তির সময় চীন বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিরক্ষা ও কৌশলগত অংশীদারত্ব আরও গভীর করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। মঙ্গলবার রাজধানীর ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজে (এনডিসি) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। তিনি বলেন, চীন বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন যাত্রায় সকল খাতে, বিশেষত সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে সহযোগিতা জোরদারে আগ্রহী।
রাষ্ট্রদূত জানান, চীন সবসময় বাংলাদেশের জনগণের প্রতি এক বিশ্বস্ত ও সদ্ভাবনাপূর্ণ প্রতিবেশীর ভূমিকা রেখেছে এবং ভবিষ্যতেও এই সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে বদ্ধপরিকর। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এনডিসির ভারপ্রাপ্ত কমান্ড্যান্ট রিয়ার অ্যাডমিরাল একেএম জাকির হোসেনসহ বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর শতাধিক কর্মকর্তা এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সামরিক প্রতিনিধিরা।
চীনা রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে বেইজিংয়ের নিরাপত্তা ধারণার কথা তুলে ধরে বলেন, এই ধারণা অভিন্ন, সমন্বিত, সহযোগিতামূলক ও টেকসই দৃষ্টিভঙ্গির ওপর ভিত্তি করে গঠিত। আধিপত্য, সম্প্রসারণ বা প্রভাব বিস্তারের চিন্তা চীনের নীতির পরিপন্থী বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ইয়াও ওয়েন বলেন, চীন এমন একটি বিশ্বব্যবস্থা চায় যেখানে প্রতিটি দেশ সমান মর্যাদা পাবে, বিশ্বায়ন হবে সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতি হবে সমবণ্টিত। তিনি গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ, গ্লোবাল সিকিউরিটি ইনিশিয়েটিভ এবং গ্লোবাল সিভিলাইজেশন ইনিশিয়েটিভ-এর মাধ্যমে মানবজাতির অভিন্ন ভবিষ্যতের লক্ষ্যে কাজ করার চীনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
রাষ্ট্রদূত আরও জানান, ২০২৫ সালে চীন তাদের ‘জাপানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধ’ ও ‘বিশ্বব্যাপী ফ্যাসিবাদ বিরোধী যুদ্ধ’-এর ৮০তম বার্ষিকী উদ্যাপন করছে, যা শান্তি ও বিশ্ব সহযোগিতায় তাদের অবিচল অবস্থানকে তুলে ধরে।
বক্তৃতার শেষে তিনি অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে রোহিঙ্গা সংকট, বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ ও ব্রিকস সহযোগিতা নিয়ে মতবিনিময় করেন এবং বলেন, চীন বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রাধিকার বাস্তবায়নে সক্রিয়ভাবে সহায়তা করতে প্রস্তুত রয়েছে।
চীন ও বাংলাদেশ এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে দুই দেশের জনসম্পৃক্ততা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রতিরক্ষা বিনিময়কে আরও দৃঢ় করতে নীতিগত অঙ্গীকারের মাধ্যমে কৌশলগত অংশীদারত্বকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চায়।