মেহেদী হাসান খান, বাংলা ভাষার ডিজিটাল বিপ্লবে এক গুরুত্বপূর্ণ অবদানকারী, এবার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে একুশে পদক পাচ্ছেন। তিনি অভ্র কিবোর্ডের উদ্ভাবক, যা বাংলা লেখাকে সহজতর করার মাধ্যমে বিপ্লব এনেছে। মেহেদীর জন্ম ঢাকায়। তিনি আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে মাধ্যমিক এবং নটর ডেম কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। পরে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেন। ছোটবেলা থেকেই সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টে তার গভীর আগ্রহ ছিল।
২০০৩ সালে বাংলা লেখার জন্য একটি সহজ সফটওয়্যার তৈরির ধারণা থেকে তিনি ইউনিকোড ও এএনএসআই সমর্থিত অভ্র কিবোর্ড তৈরি করেন। মাইক্রোসফট ডট নেট ফ্রেমওয়ার্কে প্রাথমিক প্রোটোটাইপ তৈরির পর বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন। পরবর্তীতে ক্ল্যাসিক ভিজ্যুয়াল বেসিক ব্যবহার করে সফল সংস্করণ তৈরি করেন। ২০০৩ সালের ২৬ মার্চ প্রথমবার অভ্র কিবোর্ড উন্মুক্ত করা হয় এবং পরে ওমিক্রনল্যাব থেকে এটি মুক্তি পায়। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরিতেও অভ্র ব্যবহার করা হয়।
অভ্র কিবোর্ড বাংলা লেখাকে সহজতর করার পাশাপাশি ওপেন সোর্স প্রকৃতির কারণে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহার হয়। অভ্র টিমে মেহেদী হাসান খানের সঙ্গে কাজ করেছেন রিফাত উন নবী, সিয়াম রূপালী ফন্টের স্রষ্টা সিয়াম, সারিম, ভারতের নিপন এবং মেহেদীর স্ত্রী সুমাইয়া নাজমুন।
অভ্র কিবোর্ডের জন্য মেহেদী হাসান খান ২০১১ সালে বেসিস পুরস্কার পান। এবার একুশে পদক অর্জন তার দীর্ঘ দিনের পরিশ্রম ও অবদানের সর্বোচ্চ স্বীকৃতি। অভ্র কিবোর্ড বিজয়ের তুলনায় বেশি ব্যবহারকারী-বান্ধব এবং ওপেন সোর্স হওয়ায় দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। অভ্র সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ব্যবহারের সুবিধা দেয়, যেখানে বিজয় কিবোর্ড নির্দিষ্ট লাইসেন্সের আওতায় থাকে।
মেহেদী হাসানের এই অর্জন বাংলা ভাষার প্রযুক্তিগত অগ্রগতিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।
Leave a Reply