গাজা উপত্যকা পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিকল্প পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে আরব দেশগুলো। মঙ্গলবার কায়রোয় অনুষ্ঠিত এক জরুরি সম্মেলনে মিসরের উত্থাপিত এ প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়। সম্মেলনের সমাপনী ভাষণে মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মিসরের পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজা পুনর্গঠনের জন্য ৫ হাজার ৩০০ কোটি ডলার প্রয়োজন হবে, তবে এর জন্য উপত্যকার বাসিন্দাদের বাস্তুচ্যুত করা হবে না। এর আগে ট্রাম্প একটি পরিকল্পনায় গাজার বাসিন্দাদের মিসর ও জর্ডানে স্থানান্তর করে সেখানে উপকূলীয় পর্যটন শহর নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট সিসি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ট্রাম্প এই সংকট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবেন। তিনি উল্লেখ করেন, চলমান সংঘাতে গাজা উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
গাজার ভবিষ্যৎ শাসন কাঠামো নিয়ে এখন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠেছে। এ ছাড়া পুনর্গঠনের বিপুল অর্থায়ন কোন কোন দেশ করবে, সেটিও আলোচনার বিষয়।
মিসরের প্রেসিডেন্ট জানান, গাজায় প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য স্বতন্ত্র ও পেশাদার টেকনোক্র্যাটদের নিয়ে একটি কমিটি গঠনে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে কাজ করছে তাঁর সরকার। এই কমিটি অস্থায়ীভাবে মানবিক সহায়তা তদারকিসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক বিষয় দেখভাল করবে এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের প্রস্তুতি নেবে।
মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আবদেলাত্তি পরে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ছয় মাসের জন্য গঠিত এই প্রশাসনিক কমিটির প্রধান ইতোমধ্যে মনোনীত হয়েছেন, তবে তাঁর নাম প্রকাশ করা হয়নি।
আরব লিগের মহাসচিব আহমেদ আবুল গেইত বলেন, ফিলিস্তিনি নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেই মিসর প্রস্তাবটি তৈরি করেছে এবং সম্মেলনে এটি অনুমোদিত হওয়ায় এখন এটি পুরো আরব বিশ্বের সমর্থন পেয়েছে।
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এই পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং গাজার বাসিন্দাদের বাস্তুচ্যুত না করার বিষয়টি প্রশংসনীয় বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকেও এ পরিকল্পনাকে সমর্থন দেওয়ার আহ্বান জানান।
এদিকে, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসও মিসরের প্রস্তাবকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে। সংগঠনটি ‘ফিলিস্তিনি জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্গঠনের’ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে দ্রুত প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছে, যা গাজার শাসনভার ছাড়ার ইঙ্গিত বলে মনে করা হচ্ছে।
Read More: