স্টপ এএপিআই হেইট-এর প্রকাশিত তথ্যমতে, ২০২৪ সালের মার্কিন নির্বাচন, যেখানে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হন, তার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অনলাইনে এশীয়-বিরোধী বিদ্বেষ “উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে।” সংস্থাটি বলছে, ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী নীতি এবং এইচ-১বি ভিসা নিয়ে তীব্র বিতর্ক এই প্রবণতার পেছনে ভূমিকা রেখেছে।
“ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন জেতার পর থেকে অনলাইনে এশীয়দের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ—যার মধ্যে গালিগালাজ ও সহিংসতার হুমকি অন্তর্ভুক্ত—উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে,” বৃহস্পতিবার জানায় যুক্তরাষ্ট্রে এশীয় আমেরিকান ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের অধিবাসীদের বিরুদ্ধে বৈষম্য নথিভুক্ত করা সংস্থাটি।
মানবাধিকার কর্মীরা ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির কঠোর সমালোচনা করেছেন, যা তারা বলছেন, অভিবাসনবিরোধী মনোভাব উসকে দিচ্ছে।
তারা আরও সমালোচনা করেছেন ট্রাম্পের বহুত্ববাদ, সমতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক (ডিইআই) কর্মসূচিগুলো বিলুপ্ত করার প্রচেষ্টার। তাদের মতে, এই নীতিগুলো ঐতিহাসিক বৈষম্যের শিকার সংখ্যালঘুদের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে সহায়তা করে।
ট্রাম্প বলছেন, তার নীতিগুলো অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে আসা অভিবাসীদের লক্ষ্য করে এবং ডিইআই নীতিকে তিনি বৈষম্যমূলক ও “যোগ্যতার বিরোধী” বলে অভিহিত করেছেন।
এইচ-১বি ভিসার ক্ষেত্রে ভারতীয়রা মূল অংশীদার, যদিও ট্রাম্প এই ভিসা সমর্থন করেছেন, যদিও তার কিছু সমর্থক এই নীতির বিরোধিতা করেছেন।
স্টপ এএপিআই হেইট-এর তথ্যমতে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে অনলাইনে এশীয়-বিরোধী গালাগালের সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ, যা ২০২২ সালের আগস্ট থেকে পর্যবেক্ষণ শুরুর পর রেকর্ড করা হয়। মোট ৮৭,৯৪৫টি বিদ্বেষমূলক শব্দ রেকর্ড করা হয়।
নির্বাচনের পর থেকে অনলাইনে বিদ্বেষমূলক শব্দ ব্যবহারের হার ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিশেষত, দক্ষিণ এশীয়দের লক্ষ্য করে ব্যবহৃত গালাগালের সংখ্যা জানুয়ারিতে ৭৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে নভেম্বরের তুলনায়।
একইভাবে, অনলাইনে এশীয়দের বিরুদ্ধে সহিংসতার হুমকি ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে ৫০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে নভেম্বরের তুলনায়।
অনেক অনলাইন বক্তব্য ভারতীয়দের “চাকরি চুরি” এবং “শ্বেতাঙ্গদের জীবিকা বিপন্ন” করার অভিযোগ ঘিরে আবর্তিত হয়েছে বলে জানায় সংস্থাটি।
২০২৩ ও ২০২৪ সালে দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত রাজনীতিবিদদের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে বিশেষ করে দক্ষিণ এশীয়দের বিরুদ্ধে অনলাইন বিদ্বেষ বাড়তে থাকে, যা নভেম্বরের নির্বাচনের আগেই লক্ষ করা গিয়েছিল বলে জানায় স্টপ এএপিআই হেইট।
সূত্র: টিআরটি ওয়ার্ল্ড