
সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা ও সাবেক মন্ত্রীসহ মোট ১৭ জনের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
রোববার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের অবকাশকালীন বিচারক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন এ আদেশ দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক মো. তানজিল হাসান আদালতে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করেন। দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) তানজির আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দুদকের আবেদনে বলা হয়, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পাঁচ বছর মেয়াদে শতকরা ১৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে মোট ৪৮৯ কোটি ৪৩ লাখ ৭৩ হাজার টাকা বিল গ্রহণ করা হয়। এতে সরকারের প্রায় ৩০৯ কোটি ৪২ লাখ ৪৫ হাজার ৮৯০ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।
আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, মামলার এজাহারনামীয় আসামিরা দেশত্যাগ করতে পারেন—এমন তথ্য বিশ্বস্ত সূত্রে পাওয়া গেছে। এতে মামলার তদন্ত কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ আলামত নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এসব বিবেচনায় সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা সাবেক মন্ত্রীদের মধ্যে রয়েছেন—
আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, খন্দকার মোশাররফ হোসাইন, ওবায়দুল কাদের, আনিসুল হক ও মো. আব্দুল মান্নান।
এ ছাড়া নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত অন্যদের মধ্যে রয়েছেন—
এম এ এন সিদ্দিক, রফিকুল জলিল, মোহাম্মদ শফিকুল কারীম, মো. ফিরোজ ইকবাল, ইবনে আলম হাসান, মো. আফতাব হোসাইন খান, মো. আব্দুস সালাম, মনির উজ জামান চৌধুরী, সেলিনা চৌধুরী ও মো. ইকরাম ইকবাল।
শুনানি শেষে আদালত মনে করেন, মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার কার্যক্রম নিশ্চিত করতে আসামিদের বিদেশ গমন রোধ করা জরুরি। সে কারণে আদালত তাৎক্ষণিকভাবে তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
উল্লেখ্য, মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত শেষে অভিযোগের বিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন।