
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ছাত্রদের প্রকৃত অধিকার ও গণতান্ত্রিক প্রতিনিধিত্ব প্রতিষ্ঠার’ দাবিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (কুকসু) নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। ‘কুকসু প্রতিষ্ঠা আন্দোলন’ ব্যানারে মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় তারা স্লোগান দেন—‘কুকসু আমার অধিকার, রুখে দেওয়ার সাধ্য কার’, ‘কুকসু নিয়ে তালবাহানা চলবে না’, ‘ডিসেম্বরে নির্বাচন দিতে হবে’, ‘নভেম্বরে তফসিল দিতে হবে’, ‘প্রশাসনের দ্বিচারিতা মানি না’, ইত্যাদি। অবস্থান কর্মসূচি শেষে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
আইন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী বায়েজিদ হোসেন বলেন, ‘আমরা মনে করেছিলাম কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অন্যতম নিরপেক্ষ প্রশাসন। যে প্রশাসন এখনো আমাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও একটি দল সদস্য ফরম বিতরণ করছে। প্রশাসনকে প্রশ্ন করলে তারা বলেন, সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত ছাড়া কিছু বলতে পারবেন না। এই ব্যর্থতা কাটাতে পারে একমাত্র কুকসু নির্বাচন।’
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সৈয়দা নাজিফা নাফিল বলেন, ‘জুলাইয়ের আগে আমরা ছাত্রলীগের রাজনীতি দেখেছি। ভেবেছিলাম জুলাইয়ের পর পরিস্থিতি বদলাবে। কিন্তু বর্তমান রাজনীতি একই ধারায় চলছে, যা আমাদের কাছে হতাশাজনক। আমি চাই না দলীয় রাজনীতির কারণে ক্যাম্পাস আতঙ্কে থাকুক। তাই দ্রুত কুকসু নির্বাচন চাই।’
ফার্মেসি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাইম ভূঁইয়া বলেন, ‘১০০তম সিন্ডিকেটে ক্যাম্পাস রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হলেও বিভিন্ন সংগঠন তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। কুকসু নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির অবসান ঘটাতে পারব।’
পরে শিক্ষার্থীরা উপাচার্য অধ্যাপক ড. হায়দার আলীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের ফরম বিতরণ সম্পর্কিত প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করিনি; বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশেই ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ। আমরা সবসময় বলেছি, আমরা এই ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি চাই না। আমরা তো পুলিশ নই যে লাঠি নিয়ে গিয়ে কার্যক্রম বন্ধ করব। এর আইনগত বৈধতা দিতে পারি না। আইনগত ব্যবস্থা প্রয়োজন হলে সেটা সিন্ডিকেট নেবে। আমরা চাই নির্বাচিত ছাত্র প্রতিনিধিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি নির্ধারণে অংশ নেবে।’
ছাত্র সংসদের রোডম্যাপ বিলম্বের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সিন্ডিকেট চাইলে রোডম্যাপ দিতে পারে। তবে নির্বাচনের জন্য রাষ্ট্র থেকে একটি চিঠি আসতেই হবে। আগামী সিন্ডিকেট মিটিংয়ে কুকসুর তফসিল ও নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে।’