ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে সৌদি আরবের দ্বিচারিতা ফাঁস - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:
শিরোনামঃ
সড়ক সংস্কারের দাবিতে ইবি শিক্ষার্থীদের কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ ভোলা বরিশাল সেতুর দাবিতে ইবিতে মানববন্ধন মুর্শিদাবাদে বাবরি মসজিদ নির্মাণ নিয়ে উত্তেজনা আদর্শিক নেতৃত্বই জাতিকে এগিয়ে নেয়—আফগানিস্তানের উন্নয়ন তার প্রমাণ: মামুনুল হক নোয়াখালীতে তাহাজ্জুদের সময় ১২ বছরের মাদ্রাসাছাত্রের মৃত্যু শেষ হলো কুবির পঞ্চম ছায়া জাতিসংঘ সম্মেলন ভারত অনুমতি না দেওয়ায় বুড়িমারীতে ভুটানের ট্রানজিট পণ্য আটকে অরুণাচলে মসজিদে ঢুকে ইমামকে ‘ভারত মাতা কি জয়’ বলাতে চাপ গেজেট বঞ্চনার প্রতিবাদে ইবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘The Voice of JKKNIU’-এর গ্র্যান্ড ফাইনাল অনুষ্ঠিত

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে সৌদি আরবের দ্বিচারিতা ফাঁস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫
  • ১২১ বার দেখা হয়েছে

মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনার ঝড়। একদিকে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের নিন্দা, অন্যদিকে ইরানের সঙ্গে চলমান ১২ দিনের সংঘাতে গোপনে ইসরায়েলকে সহযোগিতা — এমন দ্বিমুখী অবস্থানে আবারও বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে সৌদি আরব। তেলআবিবভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইসরায়েল হাইয়োম–এর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন এ নিয়ে এক বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের ছোড়া বিস্ফোরকভর্তি ড্রোন ইসরায়েল অভিমুখে আসার সময়, সৌদি আরব জর্ডান ও ইরাকের আকাশসীমায় হেলিকপ্টার পাঠিয়ে সেগুলো মাঝ আকাশেই গুঁড়িয়ে দিয়েছে। অথচ সৌদি আরব আনুষ্ঠানিকভাবে এই অভিযানে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে আগেই ইরানের ভূখণ্ডে কোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিল।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আচরণ মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোর ঐক্যে বড় ধরনের ফাটল ধরাবে। কারণ, গাজায় ২১ মাস ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় ৫৭ হাজার ১৩০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১ লাখ ৩৪ হাজার। অথচ এমন মানবিক বিপর্যয়ে কার্যকর কোনো ভূমিকা না রেখে বরং ইসরায়েলের সাথে গোপন যোগাযোগ এবং সহায়তার অভিযোগে আরও সমালোচিত হচ্ছে সৌদি আরব।

প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম)-এর নেতৃত্বে পুরো ড্রোন প্রতিরোধ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে যুক্ত ছিল যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, সৌদি আরব এবং জর্ডান। মার্কিন জেনারেল মাইক কুরিলা এই যৌথ সামরিক সমন্বয় করেছিলেন।

জর্ডান ইতোমধ্যে ড্রোন ভূপাতিত করার কথা স্বীকার করলেও সৌদি আরব বরাবরের মতো নীরব। ফ্রান্স বলেছে, জর্ডানে নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় তারা অভিযানে অংশ নিয়েছে, তবে ইসরায়েলের নাম এড়িয়ে গেছে।

১৩ জুন ইসরায়েল সরাসরি ইরানে হামলা চালায়। এতে ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা, পারমাণবিক বিজ্ঞানী এবং বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। এক সপ্তাহ পর যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালিয়ে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। ইরান এ হামলাকে জাতিসংঘ সনদ, আন্তর্জাতিক আইন এবং পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির লঙ্ঘন বলে অভিযোগ তোলে। পাল্টা হামলায় ইরানও ইসরায়েল ও কাতারের মার্কিন ঘাঁটি আল-উদেইদে হামলা চালায়।

২৪ জুন ট্রাম্প নিজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এ পোস্ট করে ঘোষণা দেন, ইরান ও ইসরায়েল ১২ ঘণ্টার অন্তর্বর্তী যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। প্রথমে ইরান, পরে ইসরায়েল এই যুদ্ধবিরতিতে অংশ নেয়। ২৪ ঘণ্টা পর আনুষ্ঠানিকভাবে ১২ দিনের এই সংঘাত শেষ বলে ঘোষণা করা হয়।

যদিও সৌদি আরব প্রকাশ্যে ইসরায়েলি হামলার বিরোধিতা করে এসেছে। একাধিকবার ইরানে হামলার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারিও দিয়েছে। জানিয়েছে, তাদের আকাশসীমা ব্যবহার করে হামলা চালাতে দেওয়া হবে না। অথচ বাস্তবে সেই রিয়াদই গোপনে ড্রোন ঠেকাতে হেলিকপ্টার পাঠিয়েছে — এমন খবর প্রকাশিত হওয়ার পর পুরো অঞ্চলে নতুন করে বিতর্কের সূত্রপাত।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই দ্বিচারিতা সৌদি আরবের আঞ্চলিক নীতিকে আরও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। বিশেষ করে গাজায় রক্তপাতের সময় সৌদি নেতৃত্বের নীরবতা ও অকার্যকর অবস্থান নিয়ে মুসলিম বিশ্বে ব্যাপক ক্ষোভ।

মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম শক্তিশালী বিমান বাহিনী সৌদি আরবের। তবে এদের সমরাস্ত্র এবং যুদ্ধজাহাজের বড় অংশই যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া। আর যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স তো বরাবরই ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র। এমন প্রেক্ষাপটে সৌদি আরবের গোপন সহযোগিতা নিয়ে আঞ্চলিক রাজনীতিতে উত্তেজনা ও সংশয় আরও বেড়েছে।

সবার মুখে এখন একটাই প্রশ্ন — সৌদি আরব আসলে কোন পক্ষের?

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT