২০২৪ সাল ইতিহাসের সবচেয়ে উষ্ণ বছর, যা জলবায়ু পরিবর্তনের রেকর্ড ভেঙে দিচ্ছে এবং বৈশ্বিক সংকটকে আরও তীব্র করে তুলছে।
২০২৪ সালের শেষ দিকে এসে এটি নিশ্চিত যে, এই বছরটি ২০২৩ সালের রেকর্ড ভাঙা তাপমাত্রাকে ছাড়িয়ে যাবে। বৈশ্বিক তাপমাত্রার এই অবিরাম বৃদ্ধি জলবায়ু সংকটের ক্রমবর্ধমান তীব্রতার প্রতীক এবং তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরছে।
বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন যে মানবজাতি এখনও ভুল পথে চলছে। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে নির্গত গ্যাসের পরিমাণ সর্বকালের সর্বোচ্চে পৌঁছেছে এবং ইতিহাসের সবচেয়ে উষ্ণ তিনটি দিন ঘটে গেছে জুলাই মাসে। অক্সফোর্ড অ্যাকাডেমিকে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন এটিকে “বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা” হিসেবে বর্ণনা করেছে এবং সতর্ক করেছে যে পৃথিবী “অপ্রতিরোধ্য জলবায়ু বিপর্যয়ের” কাছাকাছি চলে এসেছে।
আন্তর্জাতিক সচেতনতা বাড়লেও সংকট মোকাবিলায় সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গি অর্জন এখনো সম্ভব হয়নি। তুরস্কের জলবায়ু পরিবর্তন দপ্তরের পরিচালক হালিল হাসার বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমরা স্থির থাকতে বা লক্ষ্য পূরণে পিছিয়ে থাকতে পারি না।”
‘গ্লোবাল বয়লিং’ বা বৈশ্বিক তপ্ত অবস্থা
২০২৩ সালের জুন থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা টানা ১৬ মাস ধরে রেকর্ড ভেঙেছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, “গ্লোবাল বয়লিংয়ের যুগ এসে গেছে।” তাপপ্রবাহ, বন্যা এবং খরার মতো বিপর্যয়ের সংখ্যা ও তীব্রতা বাড়ছে, এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আরও প্রকট হচ্ছে।
২০২৪ সাল জুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে শুরু করে বন্যা ও ধ্বংসাত্মক ঝড়ের মতো চরম আবহাওয়ার ঘটনা বেড়েছে।
বরফ গলন ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি
২০২৪ সালে আর্কটিক ও অ্যান্টার্কটিকের বরফ কাভারেজ রেকর্ড কমে গেছে। এদিকে, সমুদ্রের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় এটি প্রসারিত হচ্ছে এবং উপকূলীয় অঞ্চলগুলিকে হুমকির মুখে ফেলছে।
মানবিক বিপর্যয়
জলবায়ু সংকটের মানবিক মূল্য স্পষ্ট হয়ে উঠছে। তাপপ্রবাহ, রোগ বিস্তার এবং কৃষি ক্ষতির ফলে জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তরের জন্য আরও দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। পৃথিবীকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুরক্ষিত রাখতে এখনই কাজ শুরু করতে হবে।
Leave a Reply