ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) থেকে যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যাহার - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:
শিরোনামঃ
সাকিব ঝড়ে প্রথম জয়ের আনন্দ মায়ামি ব্লেজের ইউরোপীয় তিন দেশকে হুমকি-চাপের পুরনো কৌশল ত্যাগের আহ্বান ইরানের এসএসসিতে ১২৩০ নম্বর পেয়ে তাক লাগিয়েছে নাগেশ্বরীর তুশিন পর্যায়ক্রমে সেনা প্রত্যাহারে একমত হামাস–ইসরায়েল প্রবল প্রতিবাদের মুখেও শেষপর্যন্ত ঢাকায় চালু হলো জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন অফিস চট্টগ্রাম সমিতি, ঢাকা আয়োজিত জুলাই বিপ্লবে শহীদদের স্মরণে দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ‘তুমি কে আমি কে, জঙ্গী জঙ্গী; কে বলেছে কে বলেছে, স্বৈরাচারের সঙ্গী’ স্লোগানে প্রকম্পিত বাইতুল মোকাররম জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রতীকী ম্যারাথনে যুব উপদেষ্টার অঙ্গীকার বার্সেলোনায় ‘সবার জন্য কাগজ চাই’ দাবিতে অনিয়মিত অভিবাসীদের বর্ণবাদবিরোধী প্রতিবাদ পিনাকীর আবেগঘন বার্তা – হাটহাজারীর ছাত্ররাই বিপ্লবের রক্ষক

ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) থেকে যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যাহার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ১৫১ বার দেখা হয়েছে
ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুর দিনেই একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সম্প্রতি সই করা এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) থেকে প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ট্রাম্প তার পূর্বের অবস্থানকে আরও দৃঢ় করলেন, যেখানে তিনি WHO-কে কোভিড-১৯ মহামারি ও অন্যান্য বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সংকট পরিচালনায় ব্যর্থ হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন।

২০১৯ সালে কোভিড-১৯ মহামারি শুরু হওয়ার সময় থেকেই ট্রাম্প WHO-এর ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেছেন। তার অভিযোগ, সংস্থাটি চীনের প্রতি পক্ষপাতিত্ব দেখিয়েছে এবং মহামারি সম্পর্কে সঠিক ও সময়োপযোগী তথ্য দিতে ব্যর্থ হয়েছে। নতুন আদেশে তিনি উল্লেখ করেন যে, WHO সদস্য রাষ্ট্রগুলোর “অপ্রাসঙ্গিক রাজনৈতিক প্রভাব” থেকে মুক্ত থাকতে পারেনি এবং যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশ থেকে “অন্যায্য অর্থায়ন” দাবি করেছে।

তিনি বলেন, “চীনের জনসংখ্যা ১.৪ বিলিয়ন, যা যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় প্রায় তিন গুণ, অথচ তারা WHO-তে আমাদের চেয়ে ৯০ শতাংশ কম অর্থ প্রদান করে। এটি অন্যায্য এবং অগ্রহণযোগ্য।”

নির্বাহী আদেশের মূল বিষয়বস্তু

নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেছেন:

  1. অর্থায়ন স্থগিত: WHO-কে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ অর্থায়ন অবিলম্বে স্থগিত থাকবে।
  2. কর্মী প্রত্যাহার: WHO-তে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের কর্মী ও ঠিকাদারদের ফিরিয়ে নেওয়া হবে।
  3. বিকল্প খোঁজা: WHO-এর কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র নিজস্ব এবং আন্তর্জাতিক অংশীদার খুঁজে বের করবে।
  4. সংবাদ জ্ঞাপন: জাতিসংঘের মহাসচিব এবং WHO-এর নেতৃত্বকে যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে অবহিত করা হবে।

এছাড়াও, নতুন আদেশে ট্রাম্প ২০২৪ সালের জন্য প্রণীত যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল হেলথ সিকিউরিটি স্ট্র্যাটেজি পর্যালোচনা করে নতুনভাবে প্রণয়ন করার নির্দেশ দিয়েছেন।

ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। তারা বলছেন, WHO থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে যাওয়া বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং ভবিষ্যতে মহামারি প্রতিরোধে জটিলতা সৃষ্টি করবে।

গ্লোবাল হেলথ বিশেষজ্ঞ এবং জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লরেন্স গোস্টিন বলেছেন, “এটি একটি বিপর্যয়কর সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্ত কেবল বিশ্ব স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় আঘাত হানবে না, বরং যুক্তরাষ্ট্রের বৈজ্ঞানিক নেতৃত্বকেও দুর্বল করবে।”

WHO-এর ২০২৪-২৫ বাজেট প্রায় ৬.৮ বিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে ১৮ শতাংশ অর্থায়ন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসে। এই বিশাল অর্থায়ন সংস্থার বিভিন্ন কার্যক্রম, যেমন ম্যালেরিয়া, এইডস এবং যক্ষার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

তবে ট্রাম্প দাবি করেছেন, “আমাদের অর্থায়নের তুলনায় আমরা যথেষ্ট সুবিধা পাই না। WHO এবং অন্যান্য সংস্থা যুক্তরাষ্ট্রকে ঠকিয়েছে, এবং এটি আর চলতে দেওয়া যাবে না।”

তবে ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, ভবিষ্যতে পরিস্থিতি বিবেচনায় WHO-তে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। তিনি বলেন, “তারা আমাদের ফিরে পেতে মরিয়া। দেখা যাক ভবিষ্যতে কী হয়।”

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখনও ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। তবে সংস্থাটি এর আগেও তার বিরুদ্ধে আনা পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং জানিয়েছে, তারা কোভিড-১৯-এর উৎপত্তি সম্পর্কে চীনের কাছ থেকে আরও তথ্য আহরণ করতে কাজ করছে।

এই সিদ্ধান্তের ফলে আগামী ১২ মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র WHO থেকে সম্পূর্ণরূপে সরে আসবে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই পদক্ষেপ বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় দীর্ঘমেয়াদে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্রের বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও নেতৃত্বকে দুর্বল করতে পারে।

  • দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ এর সর্বশেষ নিউজ পড়তে ক্লিক করুন: সর্বশেষ
  • দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ এর ফেসবুক পেজটি ফলো করুন: dailysabasbd

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT