রোবোটিক পোকা তৈরি করছেন এমআইটি বিজ্ঞানীরা , যা প্রকৃত পরাগায়কদের মতো কাজ করতে পারে। এই উন্নত “বাগ-রোবট” কৃষিক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটাতে পারে, কারণ এটি পরিবেশের ক্ষতি না করেই দ্রুত এবং বৃহৎ পরিসরে পরাগায়ন নিশ্চিত করতে সক্ষম।
নতুন এই নকশায় একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হলো আটটি পাখার পরিবর্তে চারটি পাখার ব্যবহার। এটি শুধু উড়ানের স্থিতিশীলতা এবং লিফট বাড়ায় না, বরং এতে অনবোর্ড ব্যাটারি এবং সেন্সর সংযোজনের স্থানও তৈরি করে। রোবোটিক পোকা উদ্ভাবনের ফলে রোবটগুলি আগের মডেলের তুলনায় ১০০ গুণ বেশি সময় উড়তে সক্ষম, যা বাস্তব জীবনের জন্য আরও কার্যকরী করে তুলেছে।
ভবিষ্যতে এসব রোবটিক পোকাগুলোর সাথে সেন্সর, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), এবং সূক্ষ্ম পাখা নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তি সংযোজনের পরিকল্পনা রয়েছে। এই উন্নতিগুলো রোবটগুলির স্বয়ংক্রিয়তা এবং দক্ষতা আরও বাড়াবে।
আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এই রোবোটিক পোকা -গুলো বৈশ্বিক খাদ্য উৎপাদন এবং টেকসই কৃষিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। বিজ্ঞানীদের এই উদ্যোগ কৃষিক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত অগ্রগতির মাধ্যমে পরিবেশ-বান্ধব সমাধান প্রদানে সহায়তা করবে।
পরিবেশের ক্ষতি কমানোসহ বৃহৎ পরিসরে দ্রুত পরাগায়ন নিশ্চিত করা ও টেকসই কৃষি ব্যবস্থার বিকাশ ঘটাতে রোবটটি থেকে সাহায্য পাওয়া যেতে পারে।
বিজ্ঞানীদের মতে, এই “বাগ-বট” প্রকল্প ভবিষ্যতে খাদ্য সুরক্ষার একটি উল্লেখযোগ্য সমাধান হতে পারে।
উল্লেখ্য, আর আগে এমআইটি ছাড়াও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় রোবোটিক পোকা নিয়ে গবেষণা করেছে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা “রোবোবি” (RoboBee) নামের একটি ক্ষুদ্র রোবট তৈরি করেছেন, যা প্রকৃত পোকামাকড়ের মতো উড়তে পারে। এটি পরাগায়ন, নজরদারি ও পরিবেশ পর্যবেক্ষণে ব্যবহারযোগ্য।
টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এক ধরনের নরম রোবটিক পোকা তৈরি করেছেন, যা কৃত্রিম পাখা দিয়ে উড়তে পারে। এই রোবট পরিবেশবান্ধব উপায়ে পরাগায়নে সহায়তা করতে সক্ষম।
এছাড়া, স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটি (UC Berkeley) ক্ষুদ্র ড্রোন-ভিত্তিক পরাগায়ন প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা করছে। তাদের উদ্ভাবিত রোবট ক্ষুদ্র পাখির মতো উড়তে পারে এবং নির্দিষ্ট গাছের ফুল থেকে পরাগ সংগ্রহ করতে সক্ষম।
এই গবেষণাগুলো পরিবেশবান্ধব কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে বিজ্ঞানীরা আশা করছেন।
আরও পড়ুন:
Leave a Reply