চাঁদ যেমন পৃথিবীকে ঘিরে ঘুরছে, তেমনি নিজের অক্ষের চারপাশেও ঘূর্ণন করছে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই দুই ধরনের আবর্তনের সময়কাল প্রায় এক—প্রায় ২৭.৩ দিন। ফলে চাঁদ পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করার সময় তার একই পাশ সবসময় পৃথিবীর দিকে মুখ করে থাকে। তাই আমরা চাঁদের কেবল একটি দিকই দেখতে পাই, অন্য পাশটি থাকে আমাদের অজানা।
বিজ্ঞানীদের মতে, কোটি কোটি বছর আগে চাঁদ নিজের অক্ষে অনেক দ্রুত ঘুরত। তখন পৃথিবীর মহাকর্ষীয় শক্তি চাঁদের তরল অন্তঃস্থলে প্রবল জোয়ার-ভাটার সৃষ্টি করত, যা সময়ের সাথে সাথে চাঁদের আবর্তনের গতি কমিয়ে দেয়। ধীরে ধীরে এই গতি পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করার গতির সমান হয়ে যায়।
১৯৬০ সালে সোভিয়েত মহাকাশযান ‘লুনা-৩’ প্রথমবার চাঁদের বিপরীত দিকের ছবি পাঠায়। এই দিকটিকে অনেকেই “চাঁদের অন্ধকার পাশ” বলে ডাকেন, কারণ পৃথিবী থেকে কোনো তরঙ্গ সেখানে পৌঁছাতে পারে না। ছবিতে দেখা যায়, সেখানে অসংখ্য গর্ত ও পর্বতমালার আধিক্য রয়েছে।
যেখানে পৃথিবীমুখী পাশে রয়েছে আগ্নেয়গিরির সৃষ্টি বিস্তীর্ণ সমভূমি বা ‘মেয়ার’, যা প্রায় ৩১ শতাংশ স্থান জুড়ে বিস্তৃত, সেখানে চাঁদের অপর পাশে রয়েছে বেশি গর্ত ও কঠিন ভূপ্রকৃতি। এই ভিন্ন গঠন ও ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যই চাঁদের দুই পাশে পার্থক্য তৈরি করেছে।
এজন্যই চাঁদের এক পাশ আমাদের চেনা, আর অন্য পাশ রহস্যে ঘেরা।