মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনার মধ্যে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকে ইসরায়েলের ওপর ঝড়ের মতো সমালোচনা করেছেন পাকিস্তান, চীন, রাশিয়া ও আলজেরিয়া। এই চার দেশ একযোগে ইসরায়েলকে তীব্র ভাষায় তুলোধুনো করে হুঁশিয়ারি দিয়েছে, ইরানের ওপর ইসরায়েলের হামলা শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, পুরো বিশ্বকেই ভয়াবহ বিপদের মুখে ফেলতে পারে।
বৈঠকে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোও ইসরায়েলের টার্গেটে পরিণত হচ্ছে। এতে ভয়াবহ পারমাণবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। এমন কাজ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
চীনের রাষ্ট্রদূত ফু কং ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসনকে আন্তর্জাতিক আইন ও সম্পর্কের সরাসরি লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এই হামলা ইরানের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তাকে আঘাত করেছে এবং গোটা অঞ্চলের শান্তি-স্থিতিশীলতা ধ্বংসের ঝুঁকি বাড়িয়েছে।
পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত আসিম ইফতিখার আহমদ কড়া ভাষায় বলেন, ইসরায়েলের এই প্রকাশ্য আগ্রাসন শুধু ইরানের জন্য নয়, গোটা অঞ্চলের এবং বিশ্বশান্তির জন্য গভীর হুমকি। তিনি ইসরায়েলের দখলদার মনোভাব ও আগ্রাসী নীতিকে মানবাধিকারের অবমাননা বলে উল্লেখ করেন।
আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত আমার বেনদজামা এই হামলাকে বিনা উসকানিতে চালানো অযৌক্তিক এবং জাতিসংঘ সনদের সরাসরি লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এই আগ্রাসন আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি তৈরি করছে।
অপরদিকে, জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির সাঈদ ইরাভানি ইসরায়েলের হামলাকে ‘অতর্কিত আগ্রাসন’ আখ্যা দিয়ে দেশটির বিরুদ্ধে শিশু ও নিরীহ মানুষের প্রাণহানির অভিযোগ আনেন। উত্তরে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, ইরান নিজেই সন্ত্রাসী পরিকল্পনার মাধ্যমে গোটা অঞ্চলে অস্থিরতা ছড়াচ্ছে।
উল্লেখ্য, ১৩ জুন থেকে ইসরায়েল ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালাচ্ছে। ইরানও পাল্টা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে। এতে মধ্যপ্রাচ্যে বড় ধরনের যুদ্ধের আশঙ্কা তীব্র হয়ে উঠেছে, যার প্রভাব সারা বিশ্বের ওপর পড়তে পারে।