স্পেনে অভিবাসীবিরোধী সহিংসতায় উত্তেজনা, আতঙ্কে অভিবাসী পরিবারগুলো - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:
শিরোনামঃ
গোপালগঞ্জে এনসিপি কর্মসূচিতে ভয়াবহ হামলা, সেনা-পুলিশের হস্তক্ষেপেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি পরিস্থিতি ইসির ওয়েবসাইটে নেই ‘নৌকা’ প্রতীক তারবিহীন বিদ্যুৎ আর কল্পবিজ্ঞান নয়, বাস্তব হলো টেসলার স্বপ্ন বাংলাদেশ থেকে বিশ্ব দরবারে “কর্মঠ”: অ্যাকাউন্টিঙে বাজিমাত গাজী জিশানের আজ ‘জুলাই শহীদ দিবস’ ভুয়া ফটোকার্ডে ভুগছে গণমাধ্যম, পথ দেখাচ্ছে সাবাস বাংলাদেশ এর স্মার্ট ফটোকার্ড  আসিফ আদনানদের নামে জিহাদি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে মামলা: আবারও জঙ্গী কার্ড? ভাড়ার তর্কে ইবি ছাত্রীকে মারধরের অভিযোগ, জনি পরিবহনের বাস আটক টিটিপি সংশ্লিষ্টতার ধুয়ো তুলে ইসলামপন্থী যুবকদের মামলা-গ্রেফতার হয়রানি: জঙ্গী নাটকের নতুন অধ্যায় ইউটিউবের বড় নীতিমালা পরিবর্তন – মৌলিকতা ছাড়া আর আয় নয়

স্পেনে অভিবাসীবিরোধী সহিংসতায় উত্তেজনা, আতঙ্কে অভিবাসী পরিবারগুলো

মোঃ সালমান বক্স, স্পেন প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৪ জুলাই, ২০২৫
  • ৫১ বার দেখা হয়েছে

স্পেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের মার্সিয়া এলাকার তোরে পাচেকো শহরে অভিবাসীবিরোধী উত্তেজনা ক্রমেই ভয়াবহ আকার নিচ্ছে। শনিবার রাতের এক সহিংস ঘটনায় অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন এবং একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই উত্তেজনার সূত্রপাত একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর, যেখানে ৬৮ বছর বয়সী এক স্প্যানিশ পেনশনভোগী অভিযোগ করেন যে, উত্তর আফ্রিকার তিন যুবক তার ওপর হামলা চালিয়েছে। তবে ঘটনার প্রকৃত কারণ এখনও স্পষ্ট নয় এবং অভিযুক্ত কাউকে গ্রেপ্তারও করা যায়নি।

এ ঘটনার পরপরই কট্টর ডানপন্থী গোষ্ঠীগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় উস্কানিমূলক পোস্ট দিয়ে ‘অভিবাসীদের সন্ধানে’ রাস্তায় নামার ডাক দেয়। এর ফলে ১২ জুলাই রাত থেকে লাঠিসোটা হাতে সংগঠিত কিছু দল শহরের রাস্তায় টহল শুরু করে। বিদেশি বংশোদ্ভূতদের খুঁজে বের করে হেনস্তার অভিযোগও পাওয়া গেছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ‘লা অপিনিয়ন ডি মুর্সিয়া’ জানিয়েছে, ওই রাতে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হলেও সংঘর্ষ এড়ানো যায়নি। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, মরক্কোর পতাকা বহন করা কিছু তরুণ এবং কট্টর ডানপন্থী গোষ্ঠীর সদস্যরা একে অপরের দিকে নানা বস্তু নিক্ষেপ করছে। শহরের বিভিন্ন সড়কে আগুনে পুড়তে থাকা আবর্জনার পাত্র ও ব্যারিকেডও দেখা গেছে।

পরিস্থিতি সামাল দিতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করেছে প্রশাসন। মার্সিয়া অঞ্চলের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি মারিওলা গুয়েভারা জানিয়েছেন, ঘৃণামূলক অপরাধের উস্কানি ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো বার্তাগুলোর ব্যাপারে তদন্ত চলছে। শহরের মেয়র পেদ্রো অ্যাঞ্জেল রোকা জানান, পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারত। তিনি আরও জানান, সংঘর্ষে অংশ নেওয়া অনেকেই বাইরের এলাকা থেকে এসেছিল।

স্প্যানিশ দৈনিক ‘এল পাইস’ এর তথ্য অনুযায়ী, সম্প্রতি মরক্কান বংশোদ্ভূত পরিবারগুলোর উদ্দেশে হুমকিমূলক বার্তা ও পোস্ট ছড়ানো হচ্ছিল। উল্লেখ্য, তোরে পাচেকোর প্রায় ৩০ শতাংশ জনসংখ্যা অভিবাসী, যা স্পেনের জাতীয় গড়ের তুলনায় দ্বিগুণ। অধিকাংশ অভিবাসী কৃষি খাতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

মুর্সিয়া আঞ্চলিক সরকারের প্রধান ফার্নান্দো লোপেজ মিরাস ‘এক্স’-এ দেওয়া বার্তায় বলেন, “আমি মানুষের হতাশা বুঝি, তবে সহিংসতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। দ্রুত শহরকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতেই হবে।”

তবে প্রশাসনের আশ্বাসের পরও শহরজুড়ে অভিবাসী পরিবারগুলোর মধ্যে ভয়ের বাতাবরণ রয়ে গেছে। তারা আতঙ্ক নিয়ে দিন পার করছেন। অনেকে নিরাপত্তার স্বার্থে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। রাতের বেলায় রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে পড়েছে। ছোট ছোট শিশু ও নারীদের নিয়ে মরক্কান বংশোদ্ভূত অভিবাসী পরিবারগুলো এই অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে চরম উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠার মধ্যেই দিন কাটাচ্ছেন।

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT