শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্ত এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক মাদি বন্য হাতির করুণ মৃত্যু হয়েছে। শনিবার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে উত্তর কাটাবাড়ি সীমান্ত এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানায়, কৃষকেরা জমির চারপাশে জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে বাতি জ্বালিয়ে রাখে। এতে আলো দেখে বন্য হাতির দল লোকালয়ে ঢুকে পড়া থেকে দূরে থাকে।
শুক্রবার রাতে নাকুগাঁও সীমান্ত এলাকা দিয়ে প্রায় ১০-১২টি বন্য হাতির দল কাটাবাড়ি এলাকায় ঢোকে। একপর্যায়ে ভোর রাতে ওই এলাকায় ১৫ বছর বয়সী একটি মাদি হাতি বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। মৃত হাতির আশপাশে তখনই হাতির পাল উচ্চ শব্দে ডাকাডাকি শুরু করে।
খবর পেয়ে বন বিভাগ ও পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। হাতিটির মৃত্যুতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের গ্রামগুলোতে আতঙ্কিত মানুষ পাহারা বসায়।
মধুটিলা রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা দেওয়ান আলী জানান, সীমান্ত এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ নিষিদ্ধ। তারপরও কিছু দুষ্কৃতিকারী জেনারেটর দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়। এতে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
হাতিটির মৃত্যুর পর থেকে ওই এলাকায় ৫০-৫৫টি হাতির পাল অবস্থান করছে। তারা আশপাশের ধানক্ষেত মাড়িয়ে দিচ্ছে। এতে আরও আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
এরইমধ্যে ময়না তদন্ত শেষ হয়েছে। প্রাথমিকভাবে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েই হাতির মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে পূর্ণ রিপোর্ট আসার অপেক্ষা করছে বন বিভাগ।
এ ঘটনায় বন বিভাগ বাদী হয়ে নালিতাবাড়ী থানায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ ইতিমধ্যে শহিদুল ইসলাম নামের এক কৃষককে গ্রেফতার করেছে। মামলায় আরও ১০-১২ জন অজ্ঞাতনামা আসামিও রয়েছে।
বন বিভাগ জানায়, এই ঘটনায় যাঁরা দায়ী, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণের জন্য তালিকা করা হচ্ছে।
এদিকে, হাতির মৃত্যুর ঘটনায় গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয়রা বলছেন, এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।